বিবাহবিভ্রাট

(1)
  • 54
  • 0
  • 971

আমার ছয় বছর বয়সী কন্যাকে তার ঠাম্মু প্রায়ই মজা করে বলে,-" দুষ্টুমি করলে একটা বুড়ো বরের কাছে বিয়ে দিয়ে দেব।" এই কথা বলা মাত্র,- আমার কন্যা তার ঠাম্মুকে বলে উঠে,-" না। আমি বাবাকে বিয়ে করব।" বিয়ে কি জিনিস, কেন করতে হয়, কাকে করতে হয়,- সে ব্যাপারে বুঝার মত বুদ্ধি আমার এই অবুঝ কন্যার হয়ে উঠেনি। কিন্তু সে পরিবার,পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক থেকে এতটুকু বুঝতে পেরেছে,- যে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে, আগলে রাখে, প্রশ্রয় দেয়, যার কাছে নিরাপদ ও নিশ্চিন্তে থাকা যায় তাকেই বিয়ে করতে হয়। তার এতটুকুই বুঝ। তাই সে বাবাকে বিয়ে করতে চায়।

1

বিবাহবিভ্রাট - 1

আমার ছয় বছর বয়সী কন্যাকে তার ঠাম্মু প্রায়ই মজা করে বলে,-" দুষ্টুমি করলে একটা বুড়ো বরের কাছে বিয়ে দিয়ে এই কথা বলা মাত্র,- আমার কন্যা তার ঠাম্মুকে বলে উঠে,-" না। আমি বাবাকে বিয়ে করব।"বিয়ে কি জিনিস, কেন করতে হয়, কাকে করতে হয়,- সে ব্যাপারে বুঝার মত বুদ্ধি আমার এই অবুঝ কন্যার হয়ে উঠেনি। কিন্তু সে পরিবার,পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক থেকে এতটুকু বুঝতে পেরেছে,- যে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে, আগলে রাখে, প্রশ্রয় দেয়, যার কাছে নিরাপদ ও নিশ্চিন্তে থাকা যায় তাকেই বিয়ে করতে হয়। তার এতটুকুই বুঝ। তাই সে বাবাকে বিয়ে করতে চায়। তার ভিতরে এখনও বৃত্তি-প্রবৃত্তি ও রিপুর খেলা শুরু হয়নি,- ...Read More

2

বিবাহবিভ্রাট - 2

জীবনের শুরুতে আমাদের সকলের মনেই স্বপ্ন থাকে,- নিজের একখানা সুন্দর, সর্বসুবিধাসম্পন্ন বাড়ী হোক। তারজন্য প্রথমেই এক টুকরো জমি আমি করি। তারপর আমি যাই আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ারের কাছে,- তার কাছে জানাই আমার আর্থিক সামর্থ্য, জমির পরিমান, আমার স্বপ্ন ও প্রয়োজনের কথা। ইঞ্জিনিয়ার বাবু আমার দেওয়া সকল তথ্য এবং তার বিদ্যা,জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার প্রয়োগে আমার জন্য একখানা বাড়ীর প্ল্যান বানিয়ে দেন৷ সেই প্ল্যান অনুযায়ী আমি বাড়ী বানাই৷ দেখা যায়,- ভূমিকম্প আসলেও সেই বাড়ী ভেংগে পড়ছে না। ভয়ংকর ঝড় আসলেও আমি সেই বাড়ীতে নিরাপদে বসবাস করছি। তা না করে,- আমি যদি সুন্দর সুন্দর বাড়ীর ছবিওয়ালা একখানা এলবাম এনে সেখান থেকে যেকোন একটা বাড়ীর ...Read More

3

বিবাহবিভ্রাট - 3

আজকে আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে আমাদের প্রজনন বিজ্ঞানীরা যেমনভাবে দিনরাত গবেষণায় রত,- কিভাবে, কোন জিনের সাথে কোন জিনের ক্রশ করালে মানের গরু, ঘোড়া, গাধা, কুকুর, ধান, গম, ফুল ইত্যাদির জন্ম দেওয়া যায়,- ঠিক তেমনি আমাদের দেশের আর্য্য ঋষিগন অতি সুপ্রাচীন কালেই তাদের গভীর সাধনালব্ধ পর্যবেক্ষণ ও জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষের বিবাহ ব্যাপারে কতগুলি নীতি-বিধি প্রচলন করেছিলেন৷ যে নীতি-বিধি অনুযায়ী বিবাহ হলে সুসন্তানের জন্ম হয় এবং সাংসারিক স্থিরতা অনেকটাই বজায় থাকে । বিবাহের মূল উদ্দেশ্য,-" উন্নয়ন আর সুপ্রজনন" পূরন হয়। আমাদের বেদে, পুরানে, বিভিন্ন শাস্ত্রে সেইসকল বিধিগুলির উল্লেখ রয়েছে।আমাদের দেশে সেইসময় ঘটকরা খুবই বিচক্ষন,জ্ঞানী, পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাসম্পন্ন ও বিবাহনীতি সম্পর্কে খুবই ওয়াকিবহাল ছিলেন। ...Read More

4

বিবাহবিভ্রাট - 4

কিছু বছর পূর্বের ঘটনা। অনেকেই জানেন,- আবার বলছি। এক উচ্চশিক্ষিত দম্পতি। স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই কোন একটা কলেজে পড়ান। জীবনের অনেকটা পেরিয়ে প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে গেছেন। ছেলে-মেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। তারা দু'জনেই এক শীতের সকালে পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীআচার্য্যদেবের কাছে এসে প্রনাম করে জানালেন,-" আমরা অনেকদিন যাবত নানা সাংসারিক ঝামেলা ও ভুল বুঝাবুঝি নিয়ে চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। আর পারছিনা। সিদ্ধান্ত নিয়েছি,- আমরা এইবার আলাদা হব,- ডাইভোর্স নেব। আপনার চরনে আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিবেদন করতে এসেছি।" শ্রীশ্রীআচার্য্যদেব তাদের এই নিবেদন শুনে ভীষণ ভারাক্রান্ত হয়ে গেলেন। কিছুক্ষন চুপ থেকে বললেন,-" আপনারা তো সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন,- আমার আর কিছু বলার নেই৷ শুধু একটা অনুরোধ করব,- ...Read More

5

বিবাহবিভ্রাট - 5

বছর দুয়েক হয়ে গেছে আমি বিয়ে করেছি। ত্রিপুরার এক গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত আছি। সুন্দর সেই গ্রামে ছোট্ট হাসপাতাল আর সাথে নতুন কোয়ার্টার। আমার স্ত্রীকে চলে আসল কোয়ার্টারে,- আমার সাথে সংসার করবে বলে। হাসপাতালের কোয়ার্টারেই আমার চেম্বার। হাসপাতাল ডিউটির আগে-পরে কোয়ার্টারে প্রাইভেট প্রেক্টিস করছি। বেশ রমরমা প্রেক্টিস। চেম্বারে সারাদিন রোগীর ভীড় । হাসপাতালে সরকারি ডিউটি আর চেম্বারে প্রাইভেট প্রেক্টিস নিয়ে আমি ভীষণ ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম। একই কোয়ার্টারে থাকলেও স্ত্রীর সাথে সারাদিন কথা বলার সুযোগ নেই। সকাল সাতটায় শুরু হয় রোগী দেখা,- মাঝে হাসপাতালে ডিউটি, মিটিং,- রাতে চেম্বার থেকে বেরুতে বেরুতে নয়টা-দশটা। মাঝখানে কোনমতে ঘরে গিয়ে তাড়াহুড়ো করে দুটো ...Read More

6

বিবাহবিভ্রাট - 6

গ্রামের সাধারণ পরিবেশে বড় হয়ে উঠা, খুবই সাধারণ,অর্ধশিক্ষিত গ্রাম্য মা-বাবার একমাত্র ছেলে পড়াশোনা শেষ করে শহরে চাকরি করছে। মা-বাবার সাংঘাতিক নিবেদিত প্রান,- তাদেরকে সুখে শান্তিতে রাখাই ছেলের মনের একান্ত বাসনা। কিন্তু শহুরে উচ্চশিক্ষিত বন্ধুবান্ধবদের সুন্দরী-স্মার্ট-উচ্চশিক্ষিত বউ দেখে নিজেও বিয়ে করার জন্য উচ্চশিক্ষিত-স্মার্ট-চটকদার সুন্দরী মেয়ে খুঁজতে থাকে,- স্ট্যাটাস রক্ষার উদ্দেশ্যে। সেই মুহুর্তে নিজের গ্রাম্য সহজ সরল মা-বাবা, নিজের গ্রাম্য আত্মীয় স্বজন, নিজের প্রকৃত অবস্থান ভুলে গিয়ে,- বন্ধুবান্ধবদের কাছে স্ট্যাটাস রক্ষাই বিয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে উঠে৷ চটকদার স্মার্ট সুন্দরীর স্বপ্নে ছেলে বিভোর হয়ে আছে। কিন্তু বিয়ের পর সেই ছেলের মাতৃভক্তি-পিতৃভক্তি প্রবলভাবে মাথা ছাড়া দিয়ে উঠছে, নিজের গ্রাম্য আত্নীয় স্বজনের কাছে নিজেকে ...Read More