Story of Mahabharat Part 71 in Bengali Spiritual Stories by Ashoke Ghosh books and stories PDF | মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 71

Featured Books
Categories
Share

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 71

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব-৭১

মহর্ষি মার্কণ্ডেয় বর্ণিত রামের কাহিনি

 

প্রাককথন

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস মহাভারত নামক মহাগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তিনি এই গ্রন্থে কুরুবংশের বিস্তার, গান্ধারীর ধর্মশীলতা, বিদুরের প্রজ্ঞা, কুন্তীর ধৈর্য, বাসুদেবের মাহাত্ম্য, পাণ্ডবগণের সত্যপরায়ণতা এবং ধৃতরাষ্ট্রপুত্রগণের দুর্বৃত্ততা বিবৃত করেছেন। নানা কাহিনি সংবলিত এই মহাভারতে সর্বমোট ষাট লক্ষ শ্লোক আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস পূর্বে নিজের পুত্র শুকদেবকে এই গ্রন্থ পড়িয়ে তার পর অন্যান্য শিষ্যদের শিখিয়েছিলেন। তিনি ষাট লক্ষ শ্লোকে আর একটি মহাভারতসংহিতা রচনা করেছিলেন, তার ত্রিশ লক্ষ শ্লোক দেবলোকে, পনের লক্ষ পিতৃলোকে, চোদ্দ লক্ষ গন্ধর্বলোকে এবং এক লক্ষ মনুষ্যলোকে প্রচলিত আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের শিষ্য বৈশম্পায়ন শেষোক্ত এক লক্ষ শ্লোক পাঠ করেছিলেন। অর্জুনের প্রপৌত্র রাজা জনমেজয় এবং ব্রাহ্মণগণের বহু অনুরোধের পর কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস তাঁর শিষ্য বৈশম্পায়নকে মহাভারত শোনাবার জন্য আজ্ঞা দিয়েছিলেন।

সেইসব মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য, যাঁরা বিশালাকার মহাগ্রন্থ মহাভারত সম্পূর্ণ পাঠ করেছেন। অধিকাংশ মানুষই মহাভারতের কিছু কিছু গল্প পড়েছেন, শুনেছেন বা দূরদর্শনে সম্প্রসারিত ধারাবাহিক চলচ্চিত্রায়ণ দেখেছেন, যা মহাভারতের খণ্ডাংশ মাত্র এবং মূলত কৌরব ও পাণ্ডবদের বিষয়ীভূত ও শ্রীকৃষ্ণের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নির্মিত।

মহাগ্রন্থ মহাভারত রচিত হয়েছে অসংখ্য কাহিনির সমাহারে, যে কাহিনিসমূহের অধিকাংশই কৌরব ও পাণ্ডবদের কাহিনির সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত।

সেই সমস্ত কাহিনিসমূহের কিছু কিছু কাহিনি সহজবোধ্য ভাষায় সুহৃদ পাঠক-পাঠিকাদের কাছে ধরাবাহিকভাবে উপস্থাপনা করার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আশা করি ভালো লাগবে।

অশোক ঘোষ

 

মহর্ষি মার্কণ্ডেয় বর্ণিত রামের কাহিনি

যুধিষ্ঠির মার্কণ্ডেয়কে প্রশ্ন করলেন, মহর্ষি, আমার চেয়ে মন্দভাগ্য কোনও রাজার কথা আপনি জানেন কি? মার্কণ্ডেয় বললেন, ত্রেতাযুগে রাম যে দুঃখ ভোগ করেছিলেন, তার তুলনা নেই। যুধিষ্ঠিরের অনুরোধে মার্কণ্ডেয় রামের কাহিনি বললেন - ইক্ষ্বাকুবংশীয় রাজা দশরথের রাম, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্ন নামে চার পরাক্রমশালী মহাবীর পুত্র ছিলেন। রামের মা কৌশল্যা, ভরতের মা কৈকেয়ী এবং লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্নের মা সুমিত্রা। বিদেহরাজ জনকের কন্যা সীতার সঙ্গে রামের বিবাহ হয়।

এখন রাবণের জন্মকথা শোন। পুলস্ত্য নামে ব্রহ্মার এক মানসপুত্র ছিলেন, তাঁর পুত্র মহর্ষি বিশ্রবা। বিশ্রবার কয়েকজন স্ত্রীর মধ্যে ইলাবেদার গর্ভে শিবের সখা ধনপতি কুবের জন্মগ্রহণ করেন। ব্রহ্মার বরে তিনি লঙ্কাপুরীর অধিপতি হন এবং পুষ্পক বিমান লাভ করেন। বিশ্রবার অন্যান্য স্ত্রীর মধ্যে কৈকষী/নিকষার গর্ভে রাবণ, কুম্ভকর্ণ, বিভীষণ ও সূর্পনখা, রাকার গর্ভে দূষণ, বিদ্যুৎজিহ্ব, মল্লিকা ও অসালিকা, পুষ্পেকটার গর্ভে মহোদর, প্রহস্ত, মহাপর্শ, খর ও কুম্ভিনাশী জন্মগ্রহণ করে। কুবেরের উপর ঈর্ষান্বিত হয়ে রাবণ কঠোর তপস্যা করেন, তাতে ব্রহ্মা তুষ্ট হয়ে তাকে বর দেন যে, মানুষ ও বানর ভিন্ন অন্য কোনও প্রাণীর হস্তে তার পরাভব হবে না। রাবণ কুবেরকে পরাস্ত করে লঙ্কা থেকে তাড়িয়ে দিয়ে লঙ্কার রাজা হয়েছিলেন। কুবের রাবণের কাছে পরাজিত হয়ে গন্ধমাদন পর্বতে চলে গেলেন।

রাবণের উৎপীড়নে কাতর হয়ে দেবতা, ব্রহ্মর্ষি ও দেবর্ষিগণ ব্রহ্মার শরণাপন্ন হলেন। ব্রহ্মা আশ্বাস দিলেন যে রাবণকে বধ করার জন্য বিষ্ণু স্বয়ং দশরথের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেছেন। ব্রহ্মার উপদেশে দেবগণ বানরী আর ভল্লুকীর গর্ভে পুত্র উৎপাদন করলেন আর দুন্দুভী নামে এক গন্ধর্বী মন্থরা নামে জন্মগ্রহণ করলেন।

বৃদ্ধ দশরথ যখন রামকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করবার সংকল্প করলেন তখন দাসী মন্থরার প্ররোচনায় কৈকেয়ী রাজার কাছে এই বর আদায় করলেন যে রাম চোদ্দ বছরের জন্য বনে যাবেন এবং ভরত যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হবেন। পিতৃসত্য রক্ষার জন্য রাম বনে গেলেন, সীতা ও লক্ষ্মণও তাঁর সঙ্গে গেলেন। প্রিয় পুত্রকে বনবাসে পাঠানোর শোকে দশরথের মৃত্যু হোলো। ভরত তাঁর মাকে ভৎর্সনা করে রাজ্য প্রত্যাখ্যান করলেন এবং রামকে ফিরিয়ে আনবার ইচ্ছায় বশিষ্ঠাদি ব্রাহ্মণগণ ও আত্মীয়স্বজন সহ চিত্রকুট পর্বতে গেলেন, কিন্তু রাম সম্মত হলেন না। তখন ভরত নন্দিগ্রামে ফিরে গিয়ে রামের পাদুকা সিংহাসনে রেখে রাজ্যচালনা করতে লাগলেন।

রাম চিত্রকূট থেকে দণ্ডকারণ্যে গেলেন। সেখানে রাবণের বোন শূর্পণখা সীতাকে খেতে এলে লক্ষ্মণ তার নাক কেটে দেয়। বোনের নাক কেটে দেওয়ায় খর ও দূষণ প্রতিশোধ নিতে এলে রাম তাদেরকে বধ করলেন। তখন শূর্পণখা তার কাটা নাক নিয়ে রাবণের কাছে গিয়ে কাঁদতে লাগল। রাবণ ক্রুদ্ধ হয়ে প্রতিশোধের সংকল্প করলেন। তিনি তার অনুচর মারীচকে বললেন, তুমি সোনার হরিণের রূপ ধারণ কোরে সীতাকে প্রলুব্ধ করো। রাম তোমাকে ধরতে গেলে আমি সীতাকে হরণ করবো। মারীচ অনিচ্ছায় রাবণের আদেশ পালন করলে, রাম মারীচের অনুসরণ কোরে তাকে বাণ মেরে আহত করলে মারীচ রামের মতো কণ্ঠস্বরে ‘হা সীতা, হা লক্ষ্মণ’ বলে চীৎকার করে উঠল। সীতা ভয় পেয়ে লক্ষ্মণকে যেতে বললেন। লক্ষ্মণ তাকে আশ্বস্ত করবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু সীতার কটু কথা শুনে রামের সন্ধানে গেলেন। এই সুযোগে রাবণ সীতাকে হরণ করে আকাশপথে নিয়ে চললেন।

পক্ষীরাজ জটায়ু দশরথের সখা ছিলেন। তিনি সীতাকে রাবণের রথে  দেখে তাঁকে উদ্ধার করবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু রাবণের হাতে নিহত হলেন। সীতা তার অলংকার খুলে ফেলতে লাগলেন। একটি পর্বতের উপরে পাঁচটি বানর বসে আছে দেখে তিনি তার হলুদবর্ণ উত্তরীয় খুলে ফেলে দিলেন। রাবণ লঙ্কায় উপস্থিত হয়ে সীতাকে অশোকবনে বন্দিনী করে রাখলেন।

রাম আশ্রমে ফেরবার পথে লক্ষ্মণকে দেখতে পেলেন। তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে আশ্রমে এসে দেখলেন সীতা নেই। রাম-লক্ষ্মণ ব্যাকুল হয়ে সীতাকে খুঁজতে খুঁজতে মরণাপন্ন জটায়ুকে দেখতে পেলেন। সীতাকে নিয়ে রাবণ দক্ষিণ দিকে গেছেন এই সংবাদ জানিয়ে জটায়ু প্রাণত্যাগ করলেন।

যেতে যেতে রাম-লক্ষ্মণ এক কবন্ধরূপী রাক্ষস কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে তার দুই হাত কেটে ফেললেন। মৃত কবন্ধের দেহ থেকে এক গন্ধর্ব বেরিয়ে এসে বললো, আমার নাম বিশ্বাবসু, ব্রাহ্মণশাপে রাক্ষস হয়েছিলাম। তোমরা ঋষ্যমূক পর্বতে সুগ্রীবের কাছে যাও, সীতার উদ্ধারে তিনি তোমাদের সাহায্য করবেন। রাম-লক্ষ্মণ ঋষ্যমুক পর্বতে চললেন, পথে সুগ্রীবের বন্ধু হনুমানের সঙ্গে তাদের আলাপ হোলো। তারা সুগ্রীবের কাছে এসে সীতার উত্তরীয় দেখলেন। রামের সঙ্গে সুগ্রীবের বন্ধুত্ব হোলো। রাম জানলেন যে সুগ্রীবকে তার দাদা বালী কিষ্কিন্ধ্যা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। রামের উপদেশে সুগ্রীব বালীকে যুদ্ধে আহ্বান করলেন। দুই ভাইয়ের ঘোর যুদ্ধ হতে লাগল, সেই সময়ে রাম বালীকে আড়াল থেকে বাণ মেরে হত্যা করলেন। রামকে ভর্ৎসনা করে বালী প্রাণত্যাগ করলেন আর সুগ্রীব কিষ্কিন্ধ্যারাজ্য এবং মৃত দাদার বিধবা সুন্দরী স্ত্রী তারাকে পেলেন।

অশোকবনে সীতাকে রাক্ষসীরা দিবারাত্র পাহারা দিত। একদিন ত্রিজটা নামে এক রাক্ষসী তাকে বললো, সীতা, ভয় ত্যাগ করো। রাম-লক্ষ্মণ কুশলে আছেন এবং শীঘ্রই সুগ্রীবের সঙ্গে এসে তোমাকে মুক্ত করবেন। আমিও এক ভীষণ দুঃস্বপ্ন দেখেছি যে রাক্ষসসেনা ধ্বংস হবে।

সীতার উদ্ধারের জন্য সুগ্রীব কোনও চেষ্টা করছেন না দেখে রাম লক্ষ্মণকে তাঁর কাছে পাঠালেন। সুগ্রীব বললেন, আমি অকৃতজ্ঞ নই, সীতার অন্বেষণে সবদিকে বানরদের পাঠিয়েছি, আর কয়েক দিনের মধ্যে তারা ফিরে আসবে। তারপর একদিন হনুমান এসে জানালেন যে তিনি সমুদ্র লঙ্ঘন করে সীতার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। তারপর রাম বিশাল বানর ও ভল্লুক সৈন্য নিয়ে যাত্রা করলেন। সমুদ্র রামকে  দর্শন দিয়ে বললেন, তোমার সৈন্যদলে বিশ্বকর্মার পুত্র নল আছেন, তাকে আমার উপর সেতু নির্মাণ করতে বল। রামের আজ্ঞায় সমুদ্রের উপর সেতু নির্মিত হোলো। এদিকে বিভীষণ সীতাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য রাবণকে অনুরোধ করলে রাবণ তাকে পদাঘাত করায় বিভীষণ এসে রামের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলেন। রাম সসৈন্যে সেতুর উপর দিয়ে সমুদ্র পার হলেন এবং লঙ্কায় সৈন্যসমাবেশ করলেন।

রামের নির্দেশে বালীপুত্র অঙ্গদ রাবণের কাছে গিয়ে জানালেন যে, সীতাকে হরণ করে তুমি আমার কাছে অপরাধী হয়েছ আর তোমার অপরাধের জন্য নিরপরাধ লোকও বিনষ্ট হবে। তুমি যেসকল ঋষি ও রাজর্ষি হত্যা করেছ, দেবগণকে অপমান করেছ, নারীহরণ করেছ, তার প্রতিফল এখন পাবে। তুমি সীতাকে মুক্ত করো নতুবা পৃথিবী রাক্ষসশূন্য করবো। রাবণের আদেশে চার জন রাক্ষস অঙ্গদকে ধরতে গেলে, তিনি তাদের বধ করে রামের কাছে ফিরে এলেন।

রামের আদেশে বানরসেনা লঙ্কার প্রাচীর ও ঘরবাড়ি ভেঙে ফেললো। দুই পক্ষে ঘোর যুদ্ধ হতে লাগল, প্রহস্ত, ধূম্রাক্ষ প্রভৃতি সেনাপতি এবং বহু রাক্ষস নিহত হোলো। রাম কুম্ভকর্ণকে বধ করলেন। ইন্দ্রজিৎ মায়াবলে অদৃশ্য হয়ে লক্ষ্মণকে বাণের আঘাতে অচেতন করলেন। সুষেণ নামে বানর বৈদ্য বিশল্যকরণী দ্বারা তাকে সুস্থ করলেন। তারপর বিভীষণের সহায়তায় লক্ষ্মণ ইন্দ্রজিতকে বধ করলেন।

পুত্রশোকে বিভ্রান্ত হয়ে রাবণ যুদ্ধভূমিতে এসে মায়া সৃষ্টি করলেন, তার দেহ থেকে বহু অস্ত্রধারী রাক্ষস বেরিয়ে আসতে লাগলো। রাবণ ভয়ঙ্কর যুদ্ধ কোরে বহু সংখ্যক বানরসেনা মেরে ফেলে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে গেলেন। পরের দিন বিভীষণের পরামর্শে হনুমান এক ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে দিয়ে মন্দোদরীর কাছে লুকিয়ে রাখা রাবণের মৃত্যুবাণ নিয়ে এলে, রাম সেই মৃত্যুবাণ দিয়ে রাবণকে মেরে ফেললেন। তারপর সীতাকে রামের সামনে নিয়ে এলে, রাম সীতার পবিত্রতার প্রতি সন্দেহ প্রকাশ কোরে সীতাকে বললেন তুমি এখানে উপস্থিত বিভীষণ, সুগ্রীব বা অন্য কাউকে পতিত্বে বরণ করতে পারো।

রামের মুখে এই দারুণ বাক্য শুনে সীতা মাটিতে পড়ে গেলেন। এই সময়ে ব্রহ্মা, ইন্দ্র, অগ্নি, বায়ু প্রভৃতি দেবগণ, সপ্তর্ষিগণ, এবং রাজা দশরথ বিমানে এসে দর্শন দিলেন। সীতা রামকে বললেন, তোমার উপর আমার ক্রোধ নেই। যদি আমি পাপ করে থাকি তবে আমার যেন মৃত্যু হয়। যদি আমি স্বপ্নেও অন্য পুরুষকে চিন্তা না করে থাকি তবে বিধাতার নির্দেশে তুমিই আমার পতি থাকো। এই কথা বলে সীতা আগুন জ্বালিয়ে তার ভিতরে প্রবেশ করলে, অগ্নিদেব নিজে সীতাকে কোলে কোরে আগুন থেকে বেরিয়ে এসে রামকে বললেন, অতি সূক্ষ্ম পাপও সীতার নেই, তুমি এঁকে গ্রহণ করো। দশরথ বললেন, বৎস, তোমার মঙ্গল হোক, চোদ্দ বছর পূর্ণ হয়েছে, তুমি অযোধ্যায় গিয়ে রাজ্যশাসন করো।

মৃত বানরগণ দেবগণের বরে পুনর্জীবিত হল। সীতা হনুমানকে বর দিলেন, রামের কীর্তি যত দিন থাকবে তুমিও তত দিন বাঁচবে, যখনই তুমি চাইবে যে কোনো ভোগ্যবস্তু তখনই তোমার কাছে উপস্থিত হবে। তারপর বিভীষণকে লঙ্কার রাজপদে অভিষিক্ত কোরে রাম সীতার সঙ্গে পুষ্পক বিমানে কিষ্কিন্ধ্যায় ফিরে এলেন এবং অঙ্গদকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করে সুগ্রীবাদির সঙ্গে অযোধ্যায় যাত্রা করলেন। নন্দিগ্রামে এলে ভরত তাকে রাজ্যের ভার অর্পণ করলেন। শুভক্ষণে মহর্ষি বশিষ্ঠ রামকে রাজপদে অভিষিক্ত করলেন। সুগ্রীব বিভীষণ প্রভৃতি স্বরাজ্যে ফিরে গেলেন। তারপর রাম গোমতী নদীর তীরে মহাসমারোহে দশটি অশ্বমেধ যজ্ঞ সম্পন্ন করলেন। কাহিনি শেষ করে মার্কণ্ডেয় বললেন, বনবাসকালে রাম এইপ্রকার দারুণ বিপদ ভোগ করেছিলেন। যুধিষ্ঠির, তুমি শোক করো না, তোমার বীর ভাইদের সাহায্যে তুমিও শত্ৰুজয় করবে।

______________

(ক্রমশ)