Story of Mahabharat Part 132 in Bengali Spiritual Stories by Ashoke Ghosh books and stories PDF | মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 132

Featured Books
Categories
Share

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 132

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব-১৩২

চতুর্দশ দিনে কৃষ্ণ ও অর্জুনের জয়দ্রথের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার কাহিনি

 

প্রাককথন

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস মহাভারত নামক মহাগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তিনি এই গ্রন্থে কুরুবংশের বিস্তার, গান্ধারীর ধর্মশীলতা, বিদুরের প্রজ্ঞা, কুন্তীর ধৈর্য, বাসুদেবের মাহাত্ম্য, পাণ্ডবগণের সত্যপরায়ণতা এবং ধৃতরাষ্ট্রপুত্রগণের দুর্বৃত্ততা বিবৃত করেছেন। নানা কাহিনি সংবলিত এই মহাভারতে সর্বমোট ষাট লক্ষ শ্লোক আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস পূর্বে নিজের পুত্র শুকদেবকে এই গ্রন্থ পড়িয়ে তার পর অন্যান্য শিষ্যদের শিখিয়েছিলেন। তিনি ষাট লক্ষ শ্লোকে আর একটি মহাভারতসংহিতা রচনা করেছিলেন, তার ত্রিশ লক্ষ শ্লোক দেবলোকে, পনের লক্ষ পিতৃলোকে, চোদ্দ লক্ষ গন্ধর্বলোকে এবং এক লক্ষ মনুষ্যলোকে প্রচলিত আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের শিষ্য বৈশম্পায়ন শেষোক্ত এক লক্ষ শ্লোক পাঠ করেছিলেন। অর্জুনের প্রপৌত্র রাজা জনমেজয় এবং ব্রাহ্মণগণের বহু অনুরোধের পর কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস তাঁর শিষ্য বৈশম্পায়নকে মহাভারত শোনাবার জন্য আজ্ঞা দিয়েছিলেন।

সেইসব মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য, যাঁরা বিশালাকার মহাগ্রন্থ মহাভারত সম্পূর্ণ পাঠ করেছেন। অধিকাংশ মানুষই মহাভারতের কিছু কিছু গল্প পড়েছেন, শুনেছেন বা দূরদর্শনে সম্প্রসারিত ধারাবাহিক চলচ্চিত্রায়ণ দেখেছেন, যা মহাভারতের খণ্ডাংশ মাত্র এবং মূলত কৌরব ও পাণ্ডবদের বিষয়ীভূত ও শ্রীকৃষ্ণের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নির্মিত।

মহাগ্রন্থ মহাভারত রচিত হয়েছে অসংখ্য কাহিনির সমাহারে, যে কাহিনিসমূহের অধিকাংশই কৌরব ও পাণ্ডবদের কাহিনির সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত।

সেই সমস্ত কাহিনিসমূহের কিছু কিছু কাহিনি সহজবোধ্য ভাষায় সুহৃদ পাঠক-পাঠিকাদের কাছে ধরাবাহিকভাবে উপস্থাপনা করার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আশা করি ভালো লাগবে।

অশোক ঘোষ

 

চতুর্দশ দিনে কৃষ্ণ ও অর্জুনের জয়দ্রথের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার কাহিনি

সকালে দ্রোণ জয়দ্রথকে বললেন, তুমি আমার পিছন দিকে ছয় ক্রোশ দূরে সসৈন্যে থাকবে, ভূরিশ্রবা, কর্ণ, অশ্বত্থামা, শল্য, বৃষসেন ও কৃপ তোমাকে রক্ষা করবেন। দ্রোণ চক্ৰশকট ব্যূহ রচনা করলেন। এই ব্যূহের পিছনে পদ্ম নামে এক গর্ভব্যূহ এবং তার মধ্যে এক সূচীব্যূহ নির্মাণ করলেন। কৃতবর্মা সূচীব্যূহের সামনে এবং বিশাল সৈন্যে ঘিরে জয়দ্রথ এক পাশে রইলেন। দ্রোণাচার্য চক্ৰশকট ব্যূহের সামনে রইলেন।

পাণ্ডবসৈন্য ব্যূহবদ্ধ হলে অর্জুন কৃষ্ণকে বললেন, দুর্যোধনের ভাই দুর্মর্ষণ যেখানে রয়েছে সেখানে রথ নিয়ে চলো, আমি এই গজাতিক সৈন্য ভেদ করে শত্ৰু-বাহিনীতে প্রবেশ করবো। অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধে দুর্মর্ষণ পরাজিত হচ্ছে দেখে দুঃশাসন সসৈন্যে অর্জুনকে ঘিরে ধরলেন, কিন্তু তাঁর শরবর্ষণে নিপীড়িত ও ভীত হয়ে শকটব্যূহের মধ্যে দ্রোণের নিকট আশ্রয় নিলেন। অর্জুন দুঃশাসনের সৈন্য ধ্বংস করে দ্রোণের কাছে এলেন এবং কৃষ্ণের অনুমতি নিয়ে হাতজোড় কোরে দ্রোণকে বললেন, আমাকে আশীর্বাদ করুন, আপনার অনুগ্রহে আমি এই দুর্ভেদ্য বাহিনীতে প্রবেশ করতে ইচ্ছা করি। আপনি আমার পিতৃতুল্য, যুধিষ্ঠির ও কৃষ্ণের ন্যায় মাননীয়, অশ্বত্থামার তুল্যই আমি আপনার রক্ষণীয়। আপনি আমার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করুন। ঈষৎ হেসে দ্রোণ অর্জুনকে বললেন, আমাকে জয় না কোরে জরদ্রথকে জয় করতে পারবে না।

দ্রোণের সঙ্গে অর্জুনের তুমুল যুদ্ধ হোলো। কিছুক্ষণ পরে কৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন, বৃথা সময় নষ্ট করো না, এখন দ্রোণকে ছাড়! কৃষ্ণের কথায় অর্জুন চলে যাচ্ছেন দেখে দ্রোণ সহাস্যে অর্জুনকে বললেন, কোথায় যাচ্ছ? শত্রুজয় না করে তুমি তো যুদ্ধে বিরত হও না। অর্জুন বললেন, আপনি আমার গুরু, শত্রু নন। আপনাকে পরাজিত করতে পারে এমন পুরুষও কেউ নেই।

অর্জুন জয়দ্রথের দিকে সত্বর চললেন, পাঞ্চালবীর যুধামন্যু ও উত্তমৌজা তাঁর রক্ষক হয়ে সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। কৌরবসৈন্য ছত্রভঙ্গ হচ্ছে দেখে দুর্যোধন দ্রোণকে বললেন, অর্জুন আপনার সৈন্য ভেদ করায় জয়দ্রথের রক্ষকগণ ভয় পেয়েছেন, তাঁদের বিশ্বাস ছিল যে জীবিত অবস্থায় অর্জুন আপনাকে অতিক্রম করতে পারবে না। আমি জানি আপনি পাণ্ডবদের হিত চান। আমি আপনাকে উত্তম বেতন দিয়ে থাকি, যথাশক্তি খুশি রাখি, কিন্তু আপনি তা মনে রাখেন না। আমাদের আশ্রয়ে থেকেই আপনি আমাদের অপ্রিয় কাজ করছেন, আপনাকে আমি বুঝতে পারিনি। আমি বুদ্ধিহীন, তাই জয়দ্রথ যখন চলে যেতে চেয়েছিলেন তখন আপনার ভরসায় তাকে বারণ করেছিলাম। আমি আতঙ্কিত হয়ে প্রলাপ বকছি, আপনি ক্রুদ্ধ হবেন না জয়দ্রথকে রক্ষা করুন।

দ্রোণ বললেন, তুমি আমার কাছে অশ্বত্থামার সমান। আমি সত্য বলছি, শোন। কৃষ্ণ সারথিশ্রেষ্ঠ, তাঁর রথের ঘোড়া দ্রুতগামী, সামান্য জায়গা পেলেও তা দিয়ে অর্জুন শীঘ্র যেতে পারেন। তুমি কি দেখতে পাও না আমার বাণ অর্জুনের রথের এক ক্রোশ পিছনে পড়ে? আমার বয়স হয়েছে, শীঘ্র যেতে পারি না। আমি বলেছি যে যুধিষ্ঠিরকে ধরবো, এখন তাকে ছেড়ে আমি অর্জুনের কাছে যেতে পারি না। অর্জুন আর তুমি একই বংশে জন্মেছ, তুমি বীর কৃতী ও দক্ষ, তুমিই শত্রুতার সৃষ্টি করেছ। ভয় পেয়ো না, তুমি নিজেই অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধ করো।

দুর্যোধন বললেন, আপনাকে যে অতিক্রম করেছে সেই অর্জুনের সঙ্গে আমি কি করে যুদ্ধ করবো? দ্রোণ বললেন, তোমার দেহে আমি এই কাঞ্চনময় কবচ বেঁধে দিচ্ছি, কৃষ্ণ, অর্জুন বা অন্য কোনও যোদ্ধা এই কবচ ভেদ করতে পারবেন না। বৃত্রাসুরকে বধের পূর্বে মহাদেব এই কবচ ইন্দ্রকে দিয়েছিলেন। ইন্দ্রের কাছ থেকে যথাক্রমে অঙ্গিরা, তার পুত্র বৃহস্পতি, অগ্নিবেশ ঋষি এবং পরিশেষে আমি এই কবচ পেয়েছি। কবচ ধারণ করে দুর্যোধন অর্জুনের অভিমুখে গেলেন। পাণ্ডবগণ তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে কৌরবসৈন্যের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগলেন।

সূর্য যখন ধীরে ধীরে অস্তাচলের দিকে যাচ্ছিল কৃষ্ণ ও অর্জুন তখনও জয়দ্রথের দিকে যাচ্ছিলেন। অবন্তিদেশীয় বিন্দ ও অনুবিন্দ অর্জুনকে বাধা দিতে এসে নিহত হলেন। অর্জুন কৃষ্ণকে বললেন, আমার রথের ঘোড়ারা বাণে আহত ও ক্লান্ত হয়েছে, জয়দ্রথও দূরে রয়েছে। তুমি ঘোড়াদের শুশ্রুষা করো, আমি শত্রুসৈন্য প্রতিহত করবো। এই বলে রথ থেকে নামলেন এবং অস্ত্রাঘাতে ভূমি ভেদ করে জলাশয় সৃষ্টি করলেন। কৃষ্ণ সাধু সাধু বলে ঘোড়াদের পরিচর্যা কোরে এবং জল খাইয়ে সুস্থ করলেন, তার পর  বেগে রথ চালালেন। অর্জুন কৌরবসৈন্য বিনাশ করতে করতে এগিয়ে চললেন এবং কিছু দূর গিয়ে জয়দ্রথকে দেখতে পেলেন।

দ্রোণের সৈন্য অতিক্রম করে অর্জুন জয়দ্রথের অভিমুখে যাচ্ছেন দেখে দুর্যোধন সবেগে এসে অর্জুনের রথের সম্মুখে উপস্থিত হলেন। কৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন, ভাগ্যক্রমে দুর্যোধন তোমার বাণের পথে এসে পড়েছেন, এখন ওঁকে বধ করো। অর্জুন ও দুর্যোধন পরস্পরের প্রতি শরাঘাত করতে লাগলেন। অর্জুনের বাণ নিষ্ফল হচ্ছে দেখে কৃষ্ণ বললেন, জলে পাথর ভাসার মতো আজব ব্যাপার দেখছি, তোমার বাণে দুর্যোধনের কিছুই হচ্ছে না। তোমার গাণ্ডীবের শক্তি ও বাহুবল ঠিক আছে তো? অর্জুন বললেন, আমার মনে হয় দুর্যোধনের দেহে দ্রোণ অভেদ্য কবচ বেঁধে দিয়েছেন, এর বন্ধনরীতি আমিও ইন্দ্রের কাছ থেকে শিখেছি। কিন্তু দুর্যোধন স্ত্রীলোকের মতো এই কবচ বৃথা ধারণ কোরে আছে, কবচ থাকলেও ওকে আমি পরাজিত করবো। অর্জুন শরাঘাতে দুর্যোধনের ধনু ছিন্ন করলেন এবং অশ্ব ও সারথি বিনষ্ট করলেন। দুর্যোধনকে মহাবিপদে পতিত দেখে ভূরিশ্রবা, কর্ণ, কৃপ, শল্য প্রভৃতি সসৈন্যে এসে অর্জুনকে ঘিরে ধরলেন। পাণ্ডবগণকে ডাকবার জন্য অর্জুন বার বার তাঁর ধনুতে টংকার দিলেন, কৃষ্ণও পাঞ্চজন্য বাজালেন।

এই সময়ে দ্রোণের নিকটস্থ কৌরবযোদ্ধাদের সঙ্গে পাণ্ডবপক্ষীয় যোদ্ধাদের ঘোর যুদ্ধ হচ্ছিল। ঘটোৎকচ অলম্বুষ রাক্ষসকে বধ করলেন। পাণ্ডব ও পাঞ্চালগণ দ্রোণের শরাঘাতে নিপীড়িত হতে লাগলেন। সহসা পাঞ্চজন্যের ধ্বনি ও কৌরবগণের সিংহনাদ শুনে যুধিষ্ঠির বললেন, নিশ্চয় অর্জুন বিপদে পড়েছেন। সাত্যকি, তোমার চেয়ে সুহৃদ কেউ নেই, তুমি সত্বর গিয়ে অর্জুনকে রক্ষা করো, শত্রুসৈন্য তাঁকে ঘিরে ধরেছে।

সাত্যকি বললেন, মহারাজ, আপনার আদেশ পালনে আমি সর্বদা প্রস্তুত, কিন্তু অর্জুন আমার উপরে আপনার রক্ষার ভার দিয়ে গেছেন, আমি চলে গেলে দ্রোণ আপনাকে অনায়াসে বন্দী করবেন। যদি প্রদ্যুম্ন এখানে থাকতেন তবে তাকে আপনার রক্ষার ভার দিয়ে আমি যেতে পারতাম। অর্জুনের জন্য আপনি ভয় পাবেন না, কর্ণ প্রভৃতি মহারথের বিক্রম অর্জুনের ষোল ভাগের এক ভাগও নয়। যুধিষ্ঠির বললেন, অর্জুনের কাছে তোমার যাওয়াই আমি উচিত মনে করি। ভীম আমাকে রক্ষা করবে, তা ছাড়া ঘটোৎকচ, বিরাট, দ্রুপদ, শিখণ্ডী, নকুল, সহদেব এবং ধৃষ্টদ্যুম্নও এখানে আছেন।

যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে সাত্যকি ভীমকে বললেন, রাজা যুধিষ্ঠিরকে রক্ষা করো, এই তোমার প্রধান কর্তব্য। পাপী জয়দ্রথ নিহত হলে আমি ফিরে এসে যুধিষ্ঠিরকে আলিঙ্গন করবো। সাত্যকি কুরুসৈন্য ভেদ কোরে এগিয়ে চললেন। দ্রোণ তাঁকে প্রতিহত করবার চেষ্টা করে বললেন, তোমার গুরু অর্জুন কাপুরুষের মতো যুদ্ধে বিরত হয়ে আমাকে প্রদক্ষিণ কোরে চলে গেছেন। তুমিও যদি সত্বর চলে না যাও তবে আমার কাছে নিস্তার পাবে না। সাত্যকি বললেন, আমি যুধিষ্ঠিরের আদেশে আমার গুরু অর্জুনের কাছে যাচ্ছি, আপনার মঙ্গল হোক, আমি আর বিলম্ব করবো না। এই বলে সাত্যকি দ্রোণকে প্রদক্ষিণ কোরে দ্রুতবেগে এগিয়ে গেলেন। তাকে বাধা দেবার জন্য দ্রোণ ও কৌরবপক্ষীয় অন্যান্য বীরগণ ঘোর যুদ্ধ করতে লাগলেন। সাত্যকির শরাঘাতে রাজা জলসন্ধ ও সুদর্শন নিহত হলেন। দ্রোণের সারথি নিপাতিত হল তাঁর ঘোড়ারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে রথ নিয়ে ঘুরতে লাগল। তখন কৌরববীরগণ সাত্যকিকে ত্যাগ করে দ্রোণকে রক্ষা করলেন, দ্রোণ বিক্ষতদেহে তার ব্যূহদ্বারে ফিরে গেলেন।

দুর্যোধনের যবন সৈন্য সাত্যকির সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলো। তাদের লৌহ ও কাঁসা-নির্মিত বর্ম এবং দেহ ভেদ করে সাত্যকির বাণসকল ভূমিতে প্রবেশ করতে লাগল। যবন, কাম্বোজ, কিরাত ও বর্বর সৈন্যের মৃতদেহে রণভূমি ছেয়ে গেলো। পর্বতবাসী যোদ্ধারা সাত্যকির উপর পাথর বর্ষণ করতে এলো, কিন্তু শরাঘাতে ছিন্নবাহু হয়ে ভূমিতে পড়ে গেলো।

সাত্যকির পরাক্রমে ভীত হয়ে অন্যান্য যোদ্ধাদের সঙ্গে দুঃশাসন দ্রোণের কাছে চলে এলেন। দ্রোণ বললেন, দুঃশাসন, তোমাদের রথসকল দ্রুতবেগে চলে আসছে কেন? জয়দ্রথ জীবিত আছেন তো? রাজপুত্র ও মহাবীর হয়ে তুমি রণস্থল ত্যাগ করলে কেন? তুমি পাশা খেলার সভায় দ্রৌপদীকে বলেছিলে যে পাণ্ডবগণ নপুংসক তুল্য, তবে এখন পালিয়ে এলে কেন ? তোমার অভিমান দর্প আর বীরগর্জন কোথায় গেলো ? দ্রোণের ভর্ৎসনা শুনে দুঃশাসন আবার সাত্যকির সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলেন কিন্তু পরাজিত হয়ে প্রস্থান করলেন।

বিকাল বেলায় দ্রোণ আবার যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন। তিনি পঁচাশি বৎসরের বৃদ্ধ হলেও ষোল বৎসরের যুবকের ন্যায় যুদ্ধ করতে লাগলেন। তার শরাঘাতে কেকয়রাজগণের জ্যেষ্ঠ বৃহৎক্ষত্র, শিশুপালপুত্র ধৃষ্টকেতু এবং ধৃষ্টদ্যুম্নের পুত্র ক্ষত্রধর্মা নিহত হলেন।

______________

(ক্রমশ)