The Vanished Shadow in Bengali Thriller by SURJYODOY ROY books and stories PDF | অন্তর্হিত ছায়া

Featured Books
Categories
Share

অন্তর্হিত ছায়া

কলমে :- সূর্য্যোদয় রায়

 

পর্ব১:  নিরুদ্দেশের নোটবুক

কলকাতা, এক অগাস্টের রাত।

রাত্রি তখন তিনটে। শহর নিস্তব্ধ, আলো-আঁধারির মিশেলে বৃষ্টি ভেজা রাস্তা জ্বলজ্বল করছে। হঠাৎই প্রিন্সেপ ঘাটের নিকটে একটি ছায়া দেখা যায়—একজন যুবক, পেছনে একটি কালো ব্যাগ, চোখে আতঙ্কের ছাপ। সে বারবার পেছনে তাকিয়ে দেখে, যেন কেউ তাকে অনুসরণ করছে।

তার নাম ছিল অর্কদীপ সেন। পেশায় এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, কিন্তু গত ছয় মাসে সে একটি এমন কিছু আবিষ্কার করেছিল যা তার জীবন পুরো উলটেপালটে দিয়েছে।

ঠিক এক সপ্তাহ পর…

সাংবাদিক রুক্মিণী দত্ত, “ঊষা সকাল” পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার, এক রহস্যজনক চিঠি পায়—চিঠিটি লিখেছে অর্কদীপ, কিন্তু সে এখন নিখোঁজ।

চিঠির মধ্যে ছিল একটি ছেঁড়া নোটবুকের পাতার কপি, যেখানে লেখা:

> “যদি আমি আর কখনও ফিরতে না পারি, তবে মনে রেখো—'প্রোজেক্ট নেমেসিস' সত্যি ছিল। এটা কেবল এক কোম্পানির নয়, এটা এক জাতীয় ষড়যন্ত্র। তুমি পারলে, সবাইকে জানিও। শুরু করো 'ব্ল্যাক রুট' থেকে…”

 

রুক্মিণী থমকে যায়। এই 'ব্ল্যাক রুট' কী?

সেই রাতেই তার ফোনে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে এসএমএস আসে:

> “তুমি যদি বাঁচতে চাও, অনুসন্ধান বন্ধ করো। অর্ককে আর কখনও খুঁজে পাবে না।”

 

কিন্তু রুক্মিণী থামার মানুষ নয়। পরদিন সকালে সে পৌঁছে যায় অর্কের ফ্ল্যাটে। তালা ভাঙা, ঘর অগোছালো, বইগুলো ছড়ানো, আর তার কম্পিউটার—পুরোপুরি মুছে ফেলা।

শুধু একটিই জিনিস বেঁচে ছিল—তার বিছানার নিচে লুকানো সেই মূল নোটবুক।

নোটবুকে ছিল পরপর কিছু ল্যাটিন নাম, কোরডিনেটস, এক গোপন সফটওয়্যারের বর্ণনা—আর শেষ পাতায় লেখা:

> “যদি কেউ এই পৃষ্ঠা পড়ে, জেনে রেখো আমি তাদের খুঁজে পেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমায় খুঁজে পাওয়ার আগেই তোমার জানা দরকার—তারা আমাদের মধ্যেই আছে।”

 


---

পর্ব ২: ব্ল্যাক রুট

রুক্মিণী সেই রাতেই নোটবুক নিয়ে তার পুরনো বন্ধু এবং হ্যাকার আদিত্যর কাছে যায়। আদিত্য নোটবুকের গোপন কোরডিনেটস ডিকোড করে বলে—

> “এগুলো কলকাতার পুরনো শহরের নিচে লুকানো কিছু সাবওয়ে ও টানেলের অবস্থান।”

 

সেই সন্ধ্যায় তারা ‘ব্ল্যাক রুট’-এর গোপন দরজা খুঁজতে বের হয়। সেও দিকে অজানা কেউ তাদের অনুসরণ করছে।

এক গলির মোড়ে হঠাৎই রুক্মিণীর হাতে একটি ছোট্ট USB ফেলে দেয় কেউ। আদিত্য সেটি খুলে দেখে অদ্ভুত একটি সফটওয়্যার, যা ‘প্রোজেক্ট নেমেসিস’-এর বিভিন্ন গোপন তথ্যের ছদ্মবেশ।

স্মার্টফোনে হঠাৎ এসএমএস আসে—

> “যদি তোমরা বেঁচে থাকতে চাও, এখনই থামো।”

 

তবে তাদের অনুসন্ধান থামে না। তারা টানেলের ভিতর নামার সিদ্ধান্ত নেয়…


---

পর্ব ৩: গোপন দরজা

টানেলের ভিতরে ঢুকে রুক্মিণী ও আদিত্য আবিষ্কার করে এক দীর্ঘ বৈদ্যুতিক সিস্টেম। অদ্ভুত যন্ত্রপাতি, স্ক্রিন, ও তথ্যের পাহাড়।

হঠাৎই তাদের ওপর হামলা হয়। কেউ তাদেরকে আটকাতে চায়। রুক্মিণী জানতে পারে, ‘প্রোজেক্ট নেমেসিস’ আসলে একটি সরকারী ও বেসরকারি মিলিত ষড়যন্ত্র, যেটা জনসাধারণের নজর এড়িয়ে গোপনে চলছে।

অর্কদীপ হয়তো এই ষড়যন্ত্র ফাঁস করার চেষ্টা করছিল।

টানেলের ভেতরে তাদের পাওয়া তথ্য অনুসারে, ‘নেমেসিস’ একটি বায়োটেক সংস্থা যা মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি বিকাশ করছিল।


---

পর্ব ৪: খারাপ দিক

রুক্মিণী ও আদিত্য বুঝতে পারে, তাদের জীবন বিপন্ন।

তারা একটি পুরনো আর্কাইভে গোপন ভিডিও পায়, যেখানে দেখা যায় কিভাবে প্রোজেক্টের পরীক্ষামূলক সাবজেক্টরা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল।

রুক্মিণী জানার চেষ্টা করে, কে বা কারা এই ষড়যন্ত্রের পেছনে। সে দিনের পর দিন অনুসন্ধান করে, কিন্তু কে যেন সব সময় তার পথে বাধা দেয়।

তার ফোন হ্যাক হয়, বাড়িতে অজ্ঞাত লোক ঘোরে, আর অদ্ভুত ভয়ঙ্কর ফোন কল আসে:

> “তুমি অনেক দূর গিয়েছো, এখন ফিরাও কঠিন।”

 


---

পর্ব ৫: সত্যের মুখোমুখি

অদ্ভুত এক সন্ধ্যায়, রুক্মিণী পান একটি তথ্য, যা সবকিছু উল্টে দেয়।

অর্কদীপ নিখোঁজ নয়, সে আসলে ‘নেমেসিস’ প্রোজেক্টের অংশ, কিন্তু পালিয়ে গেছে।

সে জানায়, প্রকৃত ষড়যন্ত্র বহু আগে থেকেই সরকারের উচ্চপর্যায়ে ছিল।

রুক্মিণী ও আদিত্য একটি শক্তিশালী গোপন চক্রের মুখোমুখি হয়, যারা দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও মানুষ নিয়ন্ত্রণ করে।


---

পর্ব ৬: শেষ যুদ্ধ

রুক্মিণী ও আদিত্য তাদের জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে ঢুকতে সক্ষম হয়।

একটি পর্দার আড়ালে যুদ্ধে রক্ত ঝরায়, বিশ্বাস ভেঙে পড়ে।

তাদের অনুসন্ধান শেষ হয় এক গভীর গোপন ডাটাবেসে, যা যদি প্রকাশ পায়, পুরো দেশের ভাগ্য বদলে যেতে পারে।

শেষ মুহূর্তে, রুক্মিণী সিদ্ধান্ত নেয়—এই সত্য সকলের সামনে আনা হবে, আর অর্কদীপের নামের সঙ্গে ইতিহাস লেখা হবে।