Agle Rekho More - 4 in Bengali Thriller by sari books and stories PDF | আগলে রেখো মোড়ে - 4

The Author
Featured Books
Categories
Share

আগলে রেখো মোড়ে - 4

#আগলে_রেখো_মোরে

দশদিন পর 
কলেজ থেকে ইরা বাড়ি এসে দেখে জামেলা বেগমের দুই বোন ও তাঁর ছেলে মেয়ে এসেছে। 
ইরা ডোকার সাথে সাথে জামেলা বেগমের  ছোট বোন বলেন কি ইরা ভালো আছো তো ( ইলা বেগম) 
আসসালামু ওলাইকুম আন্টি। হ্যাঁ আমি ভালো আছি আপনারা ভালো আছেন। (ইরা) 
হ্যাঁ আমরা ভালো আছি হাঁসি মুখে বললেন (ইলা বেগম ) 
তা শুনলাম তোমার নাকি এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেছে । এবার বাড়ির কাজ কিছু শেখ আমার বোনের থেকে। কাজ না জানলে শ্বশুর বাড়িতে বসিয়ে খাওয়াবে না বুঝলে মেয়ে মুখ বেঁকিয়ে  বললেন জামেলা বেগমের বড়ো বোন (জাবেদা বেগম) 
আমি রান্না না পারলেও আমার শ্বশুর বাড়ির লোক ফেলে তো দেবে না আর। আমার শ্বশুর বাড়ির সবাই খুব ভালো। আর রান্না আমি জানি। যখন সবাই ঘুরতে যেত আমাকে বাড়িতে একা রেখে তখনই শিখে গেছি। আর মনিমার থেকেই তো আমার রান্না শেখা। তাই আমাকে নিয়ে না ভেবে আপনি নিজের ছেলেদের নিয়ে ভাবুন । (ইরা) 
আহ আপা চুপ কর তুই। যাও মা রুমে যাও সবে কলেজ থেকে এসেছো নিশ্চয়ই। অনেক ক্লান্ত দেখাচ্ছে তোমাকে যাও তুমি। পরে আমরা গল্প করবো কেমন ( ইলা বেগম) 
আচ্ছা বলে একটু মেকি হেসে চলে গেল( ইরা) 
**ফ্যামিলির কিছু মানুষদের সাথে পরিচিত হয়ে নিন। জামেলা বেগমের দুই বোন ও দুই দাদা আছে ।  জাবেদা বেগম সবার বড়ো ওনার দুই ছেলে আছে একটার বিয়ে হয়েছে আর একজন বখাটে তৈরি হয়েছে। ওনার স্বামী একজন সৎ ব্যবসায়ী আর বড়ো ছেলেটাও ওনার মতো হয়েছে। জাবেদা বেগম ঠিক কেমন বলবো একটু ঝগরুটে প্রকৃতির । পাড়াই লোকের সাথে ঝগড়া করে বেড়াই সারাক্ষণ।তবে উনি খুব একটা খারাপ নন। ওনার পরিবারের সাথে কেউ খারাপ কিছু করলে উনিও তাকে ছেড়ে দেননা যাদু টোনা আরও যা যা দরকার করে ছাড়েন 🤭। তারপর ওনার দুই ভাই জামান বদ্দি  আর জালাল বদ্দি। দুইজনই ভালো দুই ভাইয়ের একসাথে ব্যবসা কিন্তু জালাল বদ্দি একটু অলস প্রকৃতির। জামান বদ্দির  দুই ছেলে মেয়ে। বড়ো মেয়ে দিশা রহমান পুলিশ তার হাসবেন্ড ইকরাম রহমান  একজন ডাক্তার তাদের তিন বছরের একটি মেয়ে আছে নাম তার আক্ষিঁ। ইনি আবার ইরাকে পচ্ছন্দ করেন খুব এবং ভালোবেসে পাখি বলে ডাকে। আর ওনার ছোট ছেলে দিশান ওনার সাথে ব্যবসা দেখে। জালাল বদ্দির তিন ছেলে মেয়ে। বড়ো মেয়ে ঈশিতা  দিশার থেকে দুই মাসের ছোট। ঈশিতা স্কুলে বাংলার শিক্ষিকা  তার হাসবেন্ড রাসেল খান  একজন ব্যাবসায়ী। তাদের দুই বছরের একটি ছেলে আছে নাম জিসান। ছোট মেয়ে ঈপ্সি মায়ের মতো ঝগরুটে আর বিলাসিতার জিবন কাটাতে পচ্ছন্দ করে তার স্বামী হাসান  উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হয়েও ওর সখ পূরণ করতে হিমশিম খেয়ে যায় বর্তমানে ঝগরা করে সে স্বামীকে নিয়ে বাপের বাড়ি উঠেছে। ছোট ছেলে ক্লাস 11এ পড়ে। দুই ভাইয়ের পর হলেন জামেলা বেগম তারপর ছোট বোন ইলা।ইলা একজন স্কুলের শিক্ষিকা ওনার হাসবেন্ড একজন কলেজের প্রফেসর দুই ছেলে মেয়ে ওনার। উনি বাকী সবার মতো ইলাকে হেয়ো করেন না। মন থেকেও উনি খুব ভালো। এই ওবধী হলো জামেলা  বেগমের বাপের বাড়ি সম্পর্কে। 
সন্ধ্যাবেলায় 
এই জামেলা  তুমি ইরাকে বলেছো তো। আহিদ ওর সাথে কালকে দুপুরে দেখা করতে চেয়েছে (জলিল খান) 
না বলা হয়নি এখনি বলে দিছি বলে চলে গেলেন (জামেলা বেগম) 
দুলাভাই আমার বোনকে দিয়ে তোমার দ্বিতীয় পক্ষের মেয়ের কাজ করাতে কতবার বারন করেছি। তুমি কি আমার বোনকে দিয়ে ওই মেয়ের কাজ করাবে বলে এনেছো (জাবেদা বেগম ) 
আহ আপা মেয়েটা তো এখন মেজো আপারো নাকি ওমন করে বলছিস কেন? ( ইলা) 
এই  শোন তুই বেশি বকবিনা । আজকে ওই মেয়ের মা মারা গেছে নাহলে উনি আমাদের বোনকে ধোকা দিয়েছে এটা কখনো ভুলিস না। আমাদের বোনের চোখের পানির মুল্য বোধহয় তোর কাছে নেই কিন্তু আমার কাছে আছে। জামেলাকে ডির্ভোস দিতেও চেয়েছিলেন উনি ভুলে যাস কিভাবে সেই বছর ওনার দ্বিতীয় পক্ষ মারা যাওয়ায় জামেলার সাথে আছেন এখনও উনি । (রাগের সাথে বললেন জাবেদা বেগম) 
জানি আপা কিন্তু এখানে ইরার তো কোন দোষ নেই রে। ওকে নিয়ে কেন আমরা হেসাহেসি করবো । আচ্ছা চল দেখি ইরার রুমে (ইলা বেগম) 

ইরার রুমে 
শোন ইরা কালকে তোমাকে আহিদের সাথে দেখা করতে যেতে হবে রেস্টুরেন্টে  । তোমার বাবা বলে দিয়েছেন কথাটা (জামেলা বেগম) 
আমি যেত পারবো না সামনে আমার এক্সাম আছে। (ইরা) 
আমি কোন কথা শুনতে চাই না তোমার বাবাকে তাকে হ্যাঁ বলে দিয়েছে তিনি। আর শোনো চুপচাপ শ্বশুর বাড়িতে চলে যাও আমার সংসারে আর ঝামেলা করোনা আমাকে একটু শান্তি দাও (ঝামেলা বেগম) 
দেখছি (ইরা) 
কি কথা হচ্ছে তোমাদের দুই মেয়ের (ইলা বেগম) 
আমার একটাই ছেলে আছে ইলা আর কোন মেয়ে নেই (জামেলা বেগম) 
আচ্ছা আচ্ছা রাগ করিস না চল দেখি একটু গল্প করি চারজনে (ইলা বেগম) 
এইভাবে ওনারা তিন বোন মিলে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করলেন ইরার রুমে বসে। ইরা ছিল দর্শক মাএ। তারপর সকলে  ডিনার করে যে যার রুমে ঘুমিয়ে পড়লেন।। 
পরেরদিন সকালে 
সকাল 10:30
ইরার বড়ো ফুপি ইরাকে থাপ্পড় মারেন । আর বলতে থাকেন। অসভ্য মেয়ে আমাদের মানসম্মান নষ্ট করা চিন্তা করো না সারাক্ষণ। তুই আহিদের সাথে দেখা করতে যাবি এখনি। তোমার কি কোন আশিক আছে যে যার জন্য তুমি আহিদকে এভোয়েড করছো। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে যাও বলছি বলে রাগে হিসহিস করতে বেড়িয়ে গেলেন (বড়ো ফুপি) 
ইরা ওয়াড্রোব থেকে জামা নিয়ে তৈরি হতে চলে গেল ওয়াশরুমে । ওয়াশরুমে থাকা আয়নায় তাকিয়ে নিজের গালে সদ্য থাপ্পড়ের লাল দাগের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আর বলছে "আমি কিভাবে সামিমকে  ভুলে তার জায়গা আহিদকে দিই। আচ্ছা সামিম আমাকে একটু ভালোবাসলে খুব বেশি কি ক্ষতি হয়ে যেত। কত স্বপ্ন না দেখেছিলাম আমি সামিমকে ঘিরে। আমি আর পারছি না আমাকে কেন কেউ একটুও ভালোবাসে না বলেই হুহু করে কেদেঁ  ওঠে। " তারপর চোখ মুছে ফ্রেশ হয়ে রেডী হয়ে নিল একটা সাদা সালোয়ার পরে চোখে গাড় কাজল ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক আর কপালে ছোট টিপ আর মুখে আলতো ম্যাকআপ দিয়ে তৈরি হয়ে না খেয়ে বেড়িয়ে গেল। 
দুপুর 12:30
আহিদ ও ইরা রেস্টুরেন্ট দুজনেই সামনা সামনি হয়ে বসে আছে। 
ইরা এখন তো দুপুর হয়ে গেছে কি খাবে বলো (আহিদ) 
আমার কোন পচ্ছন্দ নেই আপনি করুন (ইরা) 
ওকে বলে আহিদ ওডার করে দিল। 
উম ইরা তোমার হাতটা একটু দাও (আহিদ) 
কেনো (ইরা) 
হাতটা খেয়ে ফেলবো না দাও এখানে (আহিদ) 
ইরা হাতটা এগিয়ে দিল আহিদের দিকে 
তোমাকে এই তিনদিন কল করতে না পারাই সরি। তোমাকে না বলে চলে যেতে হল।এই তিন দিন সিঙ্গাপুরে ছিলাম দুটো ইর্মাজেন্সি  সার্জারি ছিল তাই আরকি হঠাৎ করে যেতে হলো ফেরার পথে একটা জুয়েলারী সপে এই ব্রেসলেট টা দেখে পচ্ছন্দ হয় তাই নিয়ে চলে এলাম এটা কখনো খুলবে না কেমন। ব্রেসলেট টা পড়াতে পড়াতে বললো (আহিদ) 
এটা তো ডাইমন্ডের। আমি এটা নিতে পারবোনা বলে খুলতে যাই (ইরা) 
ইরা তোমার হাসবেন্ড তোমাকে এটুকু দিতেই পারে । আমি তোমাকে ওর্ডার করছি এটা যেন খুলতে না দেখি যদি ওবাধ্য হও আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না মনে রেখ (আহিদ) 
ইরা আর কিছু না বলে ব্রেসলেট টা দেখতে থাকে। এটা তার সত্যি খুব পচ্ছন্দ হয়েছে এই প্রথম বার তাকে কেউ কিছু গিফট করল। এরা আগে করেনি নই করছে তবে সেটা তার মানি দিতো, দিশাও মাঝে মাঝে ঈদে দিত আর ওর বন্ধুমহল থেকে পাওয়া টুকটাক। সামিমের সাথে দুই বছরের রিলেশনেও কিছু দেইনি ওই দিতো। আর মা যতদিন বেঁচে ছিল মা দিত এই প্রথম কেউ দিল তাও কিছুদিনের পরিচয়ে। এদিকে যখন ইরা ব্রেসলেট নিয়ে ব্যস্ত তখন আরও একজন পর্যবেক্ষণ করতে ব্যস্ত। ইরার বাম গালে লাল দাগটা ভ্রু কুঁচকে এলো তার। ইরা তোমার বাম গালে ওটা কিসের দাগ (আহিদ) 
হ্যাঁ এতক্ষণ আহিদ পর্যবেক্ষণ করছিল ইরাকে আপনারা কি ভেবেছিলেন??? 
আরে ও ওটা হলো আলার্জী। (থতমত খেয়ে উত্তর দিল ইরা) 
ওদের কথা মাঝ পথে থামিয়ে খাবার চলে এলো। আহিদ ইরা আর নিজের টা প্লেটে নিয়ে নিল। সে খেতে খেতে মাঝে মাঝেই ইরার দিকে তাকাই ওর ইরার বলা কথাটা বিশ্বাস করে উঠতে পারেনি। খাওয়া শেষে বিল পেমেন্ট করে আহিদ ইরাকে নিয়ে কিছুক্ষণ ঘুরে  ওকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। 

চলবে......... 
এতদিন দেরিতে দেওয়ার জন্য সরি আসলে টাইপ করতে একটু টাইম যাচ্ছে আমার তাই আরকি 🙂🙂।। পরবর্তী পার্টের জন্য অপেক্ষা করুন আরপরার শেষ কমপ্লিমেন্ট দিতে ভুলবেন না। আপনাদের ছোট্ট কমপ্লিমেন্ট আমাকে সামনে আরও লিখিতে উৎসাহিত করে। ধন্যবাদ 🌼🌼।।