" মেডিকেল কলেজে ঠাকুরের সৎসঙ্গ?!! না, না.. কলেজের অডিটোরিয়ামে শুধু মেডিকেল কনফারেন্স বা সরকারি অনুষ্ঠানই করা যাবে। এইসব সৎসঙ্গ-টৎসঙ্গ মেডিকেল কলেজে করার অনুমতি দেওয়া যাবে না।"
যখন কয়েক বৎসর পূর্বে আমার কর্মস্থল আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজের অডিটোরিয়ামে সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান করার জন্য কতৃপক্ষের অনুমতি চাইতে গেলাম তখন এরকমই ছিল এক- দুইজন বড় কর্তাব্যাক্তির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। শেষে প্রিন্সিপাল স্যার ডাঃ কে.কে. কুন্ডু ও আরো কয়েকজন স্যারের সহযোগিতায় অনুমতি পাওয়া যায়।
সত্যিই তো, একটা মেডিকেল কলেজ - যেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চা করা হয়, আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষা দেওয়া হয়, বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলা হয় সেখানে শ্রীশ্রী ঠাকুরকে কেন্দ্র করে ঈশ্বর, ধর্ম, আদর্শ এইসব চর্চার কি উপযোগীতা? আদৌ কি এর কোন যৌক্তিকতা আছে? আমাদের শরীর ও মনের রোগ উপশমে কোন ভূমিকা কি আছে এই ধরনের সৎসঙ্গ বা আধ্যাত্মিক আলোচনা ও পরিচর্চার?!!
আমরা যারা ডাক্তারী পড়েছি তারা Health এর একটা সংজ্ঞা ( WHO র) খূব মূখস্ত করতাম পরীক্ষায় পাশ করার জন্য। PSM এর মৌখিক পরীক্ষায় এই সংজ্ঞা কোনকারনে বলতে না পারলে নির্ঘাত ফেল৷ খটমটে সংজ্ঞাটি হল-"Health is a state of complete physical, mental and social well-being and not merely the absence of the disease or infirmity"
কয়েক লাইনের এক সংজ্ঞা। কিন্তু এই সংজ্ঞা নিরূপনের আগে ও পরে WHO র কত কত দিগ্গজ পন্ডিত নিজেদের মধ্যে বাক্ বিতন্ডা, চুলছেড়া বিশ্লেষন, মন কষাকষি, টেবিল চাপড়ানো ভাষন দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই।এই সংজ্ঞা যখন তৈরি করা হয় তখনই WHO র কয়েকজন পন্ডিত ডাক্তারের মনে খুচ খুচ করছিল। কি যেন একটা বাদ পড়ে গেল! Physical, mental ও social - এই তিনটি dimension ছাড়া ও আরেকটি dimension যেন বাকী রয়ে গেল - যেটা ছাড়া স্বাস্থের সংজ্ঞাটা ঠিক পরিপূর্ণতা পাচ্ছে না।
সেই সময় WHO র এক খুতখুতে পন্ডিত Dr. Arnold Toynbee এই বাদ পড়ে যাওয়া dimension টা' কে উল্লেখ করেছিলেন spiritual vacuum ( আধ্যাত্মিক শূন্যতা) বলে - বিশেষত পশ্চিমের শিল্পোন্নত দেশগুলির ক্ষেত্রে।তিনি তার ভাষনে এই spiritual vacuum সম্পর্কে বলেছিলেন " A vacuum that led to widespread psychological insecurity with the consequent deleterious effects on mental and physical -health. " ( অর্থাত, এই আধ্যাত্মিক শূন্যতা এক সুদূরপ্রসারী মানসিক উদ্বেগ বা নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দেয় যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।)
তিনি এই বিতর্ক উস্কে দিলেন,-কিন্তু তা চলতে লাগল বছরের পর বছর। তারপর ইং ১৯৮৩ সালে World Health Assembly তে নরওয়ে থেকে আসা একজন সদস্য Dr.F.Mellbye তার ও অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশগুলির অবস্থা বর্ননা করতে গিয়ে বলেছিলেন, " a deterioration in mental health, manifested in problems such as alcoholism, drug abuse, criminality, social maladjustment and general unhappiness and fear of the future, at a time when the economic and social situation of his country was quite promising. " ( অর্থাত, দেশবাসীর মানসিক স্বাস্থের এক চূড়ান্ত অবনতি দেখা যায় - যা'র ফলশ্রুতিতে মানুষ মদ ও অন্যান্য মারন নেশায় আসক্তি, অপরাধপ্রবনতা, মানিয়ে নেওয়ার অক্ষমতা , আনন্দহীনতা ও ভবিষ্যত সম্পর্কে নিরাপত্তাহীনতা ইত্যাদি নানা সমস্যায় ভুগছে। যদি ও সেই সময় দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান যথেষ্ট সন্তোষজনক ছিল।)
কি কারনে এই দূরাবস্থা?? সেই একই সম্মেলনে Dr Abdul Rahman Al Awadi তার ভাষনে একই বক্তব্য একটু অন্যভাবে বলেন-"Material progress in the present world has reached levels unprecedented in past history or civilization. Yet we find that what prevails in this world are anxiety and apprehension, so much so that one could say that the distinguishing feature of this age is a sense of loss and uncertainty. We have stripped man, over the last decades, of his spiritual values, and materialism is now in full control of all aspects of our life to the extent that man feels lost and restless, desperately seeking tranquility and peace of mind". 1 am quite certain" he concluded "that regardless of what we do to provide health care for the body and the mind, man shall remain lost and restless until we provide for the spiritual aspect of life" ( বর্তমান পৃথিবীতে জাগতিক উন্নতি তার চরম শিখরে পৌছেচে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মানুষের উদ্বেগ ও দুঃশ্চিন্তা এতটাই বেড়ে গেছে যে হতাশা ও অনিশ্চয়তাপূর্ন জীবনই আমাদের নিত্যসংগী। বিগত দশকগুলিতে দিন দিন আমরা আধ্মাত্ত্বিক মূল্যবোধ হারিয়েছি - পাশাপাশি জাগতিক বিষয়াদিই আমাদের জীবনের মূল উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছে৷ এবং তা এতটাই যে আমাদের হতাশাময় ও অস্থির জীবনে শান্তি- স্বস্তির বড়ই অভাব। তাই আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি মানুষের আধ্মাত্ত্বিক জীবনের উন্নতিসাধনে যত্নবান না হই তবে শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা কঠিন হবে।)
এর পর এই বাক্ বিতন্ডা চলতে থাকে বছর বছর। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধর্মতাবলম্বী প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মতামত সংগৃহীত হতে থাকে। Health এর সংজ্ঞায় "spiritual dimension " সংযুক্ত করার জন্য সমস্ত প্রতিনিধিদের সম্মিলিত প্রয়াসে এক খসরা প্রস্তাব তৈরী হয়। ৩৬ তম World Health Assembly তে এই খসরা প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেই সম্মেলনেই WHO র এক প্রতিনিধি Dr. Al Saif তার ভাষনে বলেন "whatever technological progress may be made, there can be no true progress so long as a person's body alone is treated; in short, both the body and the soul must be treated".( যতই কারিগরি ও যান্ত্রিক উন্নতিসাধন করা হোক না কেন শুধুমাত্র শারীরিক চিকিৎসায় মানুষের উন্নতিসাধন অসম্ভব, যদি না তার শরীর ও আত্মা দুটোরই পরিচর্যা না করা হয়।)
এই সম্মেলনেও এই ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌছা সম্ভব হয় নি। নানা মুনির নানা মত চলতে থাকে। এর মধ্যে একজনের বক্তব্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। President of Bosnia, 'Alija 'Ali Izetbegovic, তার এক মন্তব্যে বলেন "Materialism always stresses what is common to animals and humans, while religion stresses what makes them different.. আবার Camus নামে এক পন্ডিতব্যাক্তি বলেন " man is an animal which refuses to be so",
এইভাবে চলতে চলতে ঠিক চৌদ্দ বছর পর the special group of the WHO Executive Board for the review of the Constitution যে সংজ্ঞা প্রস্তাব করে তা হ'ল : Health is a dynamic state of complete physical, mental, spiritual and social well-being and not merely the absence of disease or Infirmity.'অর্থাত শেষ পর্যন্ত WHO মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতিকেও স্বাস্থের একটি বিশেষ দিক বলে মেনে নিতে বাধ্য হল।
কয়েক দশক পূর্বেও ডাইরিয়া, ম্যালেরিয়া, কলেরা, যক্ষা ইত্যাদি সংক্রামক রোগসমূহ মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারন বলে গন্য করা হত। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভুত উন্নতি এইসমস্ত রোগগুলির মারনপ্রভাব আজ অনেকটাই খর্ব করতে সমর্থ হয়েছে। সঠিক প্রতিষেধক গ্রহন করলে এবং সঠিক সময়ে সঠিক চিকিতসা গ্রহন করলে এই সমস্ত রোগের কারনে আজ আর সাধারনতঃ মানুষের মৃত্যু হয় না।কিন্তু তা বলে আমাদের জীবন নিশ্চিন্ত হয়ে উঠেনি। এই সমস্ত সংক্রামক রোগের চেয়েও ভয়ংকর রোগব্যাধি সমূহ আমাদের জীবনহরনের জন্য সর্বদা উৎ পেতে আছে। বিভিন্ন হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমন ও ধুমপানজনিত রোগ, ব্রেইন স্ট্রোক, দূর্ঘটনা, আত্মহত্যা, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারনসমূহ আজকের পৃথিবীতে অধিকাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী। যেকোন সময় এদের কোনএকটি কারন আমাদের প্রত্যেকের জীবনে যমদূতের মত হাজির হতে পারে।
অধিকাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী এই কারনগুলির কোনটারই সুনির্দিষ্ট কারন ও প্রতিষেধক চিকিৎসা বিজ্ঞানের পক্ষে বের করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত চিকতসা বিজ্ঞানীরাই এই রোগসমূহের কারন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আমাদের তীব্র প্রতিযোগীতাপূর্ন জীবনের উদ্বেগ, হতাশা, ক্ষোভ, একাকীত্ব, নিরানন্দ কে দায়ী করে থাকেন। তার সাথে আছে অবাঞ্চিত খাদ্যাভ্যাস, ত্রুটিপূর্ণ জীবনচর্যা, বিভিন্ন মারন নেশা ও কু- প্রবৃত্তির প্রতি আমাদের আসক্তি।
পৃথিবীর বিভিন্ন স্বনামধন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের সংস্থাসমূহ মানুষের স্বাস্থের উপর ধর্মীয় বিশ্বাস ও তদনুগ আচরনের প্রভাব নিয়ে গবেষনায় রত। বিভিন্ন বয়স, জাতি ও বিভিন্ন স্থানের মানুষের উপর সংগঠিত ৯৯ টি গবেষনার উপর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ধর্মীয় বিশ্বাস ও তদনুরূপ আচরন মানুষের জীবনে নির্মল আনন্দ নিয়ে আসে, জীবনে সন্তুষ্টিবোধ জাগ্রত করে, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধি করে, মানসিক অবসাদ কমায়। আত্মসম্মান জাগ্রত করে, ব্যাক্তিগত ও দাম্পত্য আনন্দ বজায় রাখে, আযু বৃদ্ধি ঘটায়, বিভিন্ন রোগের ( heart disease, colitis, cancer, arteriosclerosis, CVD, suicide etc) প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও দ্রুত আরোগ্য ঘটায়। UK তে করা এক পর্যাবেক্ষনমূলক গবেষনায় দেখা গেছে যারা মাসে অন্ততঃ একবার কোন সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে এবং প্রতিদিন একবার প্রার্থনা করার অভ্যাস রয়েছে তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবনতা পাচগুন কম পরিলক্ষিত হয়, তাদের গড় আয়ু অন্যান্যদের তুলনায় সাত বছর বেশী হয়ে থাকে। যে সমস্ত মহিলারা ধর্মীয় আচারে অভস্ত তাদের মৃত্যুহার তুলনায় ৩৩% কম, তাদের শিশুদের learning ability ( শেখার ক্ষমতা) তুলনামূলকভাবে বেশী। ধর্মীয় আচারে অভ্যস্ত মানুষদের ঘুমের গুনগত মান ও পরিমান বেশী বলে জানা যায়।
মেডিকেল স্কুলে Anatomy, physiology, medicine, surgery ইত্যাদি বিষয় শেখানো হয়। কিন্তু ডাক্তাররা কিভাবে মানুষ হবে তা তো শেখানো হয় না!! রোগীর চিকিৎসা তো পরে হবে। আগে আমরা ডাক্তারদের তো সুস্থ মানুষ হই। আধ্যাত্মিকতা ছাড়া যে আমরা অসুস্থ। তাই আমরা কেউ খুব নামকরা সার্জন, কেউ বিশাল বিশাল ডিগ্রী ধারী বিশেষজ্ঞ, কোটি কোটি টাকার মালিক... কিন্তু সম্পূর্ন মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি।ভাল ডাক্তার হচ্ছি... কিন্তু ভাল স্বামী হতে পারিনি, ভাল বাবা, ভাল পুত্র, ভাল প্রতিবেশী হয়ে উঠতে পারছিনা। ভাল ডাক্তার হয়ে বিশাল টাকার মালিক হউয়াটাকেই জীবনের সাফল্য ভেবে ভুল করছি। বুঝতেই পারছিনা এটা একটা Tumouric growth। আমাদের অনেকেরই চলন- কথা-অভ্যাস- ব্যাবহার শ্রেয়কেন্দ্রিক না হউয়ায় রোগীর শ্রদ্ধা আকর্ষণ করতে ব্যার্থ হচ্ছি, ডাক্তার- রোগীর মধ্যে যে বিশ্বাস ও ভরসার একটা সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে সেটা হারিয়ে একটা যান্ত্রিক সম্পর্কে পরিনত হচ্ছে।
যারা মানুষ বাঁচানোর পেশায় যুক্ত,- সেই ডাক্তারদের মধ্যে আত্মহত্যার হার অন্যান্য সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশী, মানসিক অবসাদ, একাকীত্ব ও মাদকাসক্তি ডাক্তারদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশী, ডাক্তারি পেশার অতিরিক্ত চাপে সংসার জীবন বিপর্যস্ত অনেক ডাক্তারেরই। এই ডাক্তারদের কে বাঁচাবে? কিসের অভাবে তাদের এই দূর্গতি?মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে শুধু মেডিকেল সেমিনার করে তাদের এই সমস্যা দূর হবে?
ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ক ঠিক পন্য কেনা- বেচার সম্পর্ক নয়। একটা ভালবাসার ও মানবিকতার সম্পর্কও রয়েছে,- যা ভুলে রোগীদেরকে আমরা কর্পোরেট হাসপাতালের বিপুল আয়ের একটা মাধ্যম হিসাবে দেখছি।
তাইতো শ্রীশ্রী ঠাকুর আমাদের সাবধান করে দিয়ে বললেন-
" চিকিৎসাতে চাস যদি তুই
আত্মপ্রসাদ টাকা-
টাকায় নজর না দিয়ে তুই,
রোগীর পানে তাকা।"
আমরা ধরেই নেই যত লম্বা ডিগ্রি তত বড় ডাক্তার। কিন্তু শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র অন্য কথা বলেন-
"He who does not love
his mother, father,
bothers and sisters too
with every interesting urge
to make them healthy
is not a promising doctor;
because,
his heart is not
so ইন্তেরেস্তেদ
that he can মাকে
his promising intelligence
cure the sufferers.
"আজকাল বিভিন্ন ম্যানেজমেন্ট কোর্সের খুব প্রসার। উচ্চ বেতনের চাকরির জন্য খুব ডিমান্ড। Buisness Management, Hotel Management, Hospital Management, Social Management, Event Management কত কি!! সবাই ম্যানেজমেন্ট শিখছে- কিন্ত সংসার ম্যানেজমেন্টে ডাহা ফেল! কোন স্কুল, কোন কলেজ সংসার ম্যানেজমেন্টের কোন কোর্স করায় না। উচ্চ উচ্চ ডিগ্রীধারী, বিশাল বিশাল পদাধিকারী দম্পতী - কিন্তু সংসার জীবনে অশান্তির আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাড়খার হচ্ছে জীবন। বড় কোম্পানির বড় ম্যানেজার,- কত কত লোককে ম্যানেজ করেন। কিন্তু নিজের সংসারে স্ত্রীকে 'ম্যানেজ'করতে পারছেন না। কত বড় ডাক্তার! কত কত মানুষের জীবন রক্ষা করছেন। কিন্তু নিজের ছেলে মেয়ের জীবন যে উচ্ছন্নে যাচ্ছে লক্ষই নেই। হোটেল ম্যানেজমেন্টের শিক্ষক- কিন্তু নিজের মা- বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে হচ্ছে। কি লাভ আমার এই শিক্ষায়, এই ডিগ্রিতে, এই উচ্চ বেতনে? আমি যতই শিক্ষিত হই, যত বড় পন্ডিত হই না কেন- সংসার নামক ইউনিভার্সিটিতে এই ডিগ্রী কোন কাজেই আসছে না। শ্রীশ্রী ঠাকুরের আদর্শ সেই ইউনিভার্সিটিতে পাশ করতে আমাদের পথ দেখায়।
তার মতে- "সংসার জীবনে যে যত অকৃতকার্য তার আধ্যাত্মিক চক্ষু তত তমসাচ্ছন্ন।
" ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, ভগবান বুদ্ধ, প্রভু যীশু, ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ, শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র... উনারা সকলেই Teacher of Life. মানুষ হতে শেখান আমাদের। ভালবাসা শেখান আমাদের। এই জটিল সংসারে কিভাবে সাম্যতা বজায় রেখে সফলভাবে চলতে হয় তা নিজে আচরন করে করে শেখান। যুগোপোযোগী যিনি, সর্বশেষ যিনি, পূর্বতনদের পরিপূরনকারী যিনি... তার আশ্রয় আমাদের সকলেরই গ্রহন করা উচিত। যদি মানুষ হতে চাই... সে আমি ডাক্তার হই, আর ব্যারিস্টার। শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র এই যুগে আবির্ভূত এক পরম বিস্ময়! সর্বপরিপূরনী যূগপুরুষোত্তম তিনি। শিক্ষালাভ করেছেন এলোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি, পেশাগত জীবনে চিকিৎসা করেছেন হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে, অসংখ্য ফর্মূলা দিয়েছেন আয়ুর্বেদ ঔষধের।তিনি বলতেন," আমি এলোপ্যাথি বুঝিনা, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক বুঝিনা... আমি বুঝি কিউরোপ্যাথি।"
তিনি বলেন-
" He who knows the functions
of physique
and all its components
with feeling, knowing, willing
along with its
psycho- physical tenor
and can cure maladies judiciously
with every cordial benevolence
is a normal physician-
an abater
of distress and diseases."
তিনি সারা জীবন ধরে করে করে দেখিয়েছেন আমাদের শরীর- মনের স্বস্তি ও সুস্থতার জন্য শ্রেয়কেন্দ্রিক নিষ্ঠা, আনুগত্য, কৃতিসম্বেগ, শ্রমসুখপ্রিয়তা, সত্তাপোষনী আহার- বিহার, চাল- চলন, অভ্যাস- ব্যাবহার, কথা- আচরন কতটা অপরিহার্য। তিনিই আমাদের শুনিয়েছেন " Do never die, nor cause death but resist death to death." ( মরো না, মেরো না, পারো তো মৃত্যুকে অবলুপ্ত কর)।
ধর্ম নিয়ে আমাদের শিক্ষিত সমাজের যে অজ্ঞতা ছিল, যে ভ্রান্ত উপেক্ষা ছিল তা দূর করতে তিনি খুব সহজ করে বললেন -
"ধর্মে সবাই বাঁচে বাড়ে
সম্প্রদায়টা ধর্ম না'রে"
আবার বললেন-
" বাচতে নরের যা যা লাগে
তাই নিয়ে তো ধর্ম জাগে।
"বাস্তব যা তা স্থূলই হোক আর অতীন্দ্রিয়ই হোক তাকে বাদ দিয়ে বৃথা আধ্যাত্মিকতার অনুসন্ধানে ঘুরে বেড়িও না "
তাঁর জীবন ও কথা নিয়ে আলোচনা, চর্চা, সেমিনার প্রতিটা মেডিকেল কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করা একান্ত প্রয়োজন। কারন তিনি তার পূর্ববর্তী সমস্ত লোকশিক্ষকদেরই পরিপূরনকারী। তাঁকে জানলে সকলকেই জানা হয়। মানুষ হউয়ার পথে আমাদের যাত্রা শুরু হয়।আজ সারা বিশ্বে লক্ষ কোটি মানুষ তাঁকে গ্রহন করে, তার আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে এক আনন্দময়, নিশ্চিত জীবন অতিবাহিত করছে- যে জীবনে হতাশা, দুঃশ্চিন্তা, উদ্বেগ, নিরানন্দের কোন স্থান নেই।
References:
1. Spirituality in the Definition of Health; M.H.Khayat
2. WHO Basic Documets, (1996) p. 1, Constitution of the World Health
3. Impact of religious practice on human health -http:/tinyurl.com/pgpaw7m.
4. Psychological stress and cardiovascular disease-by Joel E. Dimsdole.
5. Hindustan Times, Sept 30, 20176.The message, Sri Sri Thakur Anukul Chandra
7. অনুশ্রুতি। শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র