I found you on the wrong path - 2 in Bengali Love Stories by MOU DUTTA books and stories PDF | ভুল পথে পেলাম তোমাকে - Part 2

Featured Books
Categories
Share

ভুল পথে পেলাম তোমাকে - Part 2

“যে দিনটা বদলে দিল সব”—

ইরার সারা রাত ঘুম না হওয়া

গলির সামনে দাঁড়ানো, নার্ভাসনেস

মায়ার দেরি করে আসা

মায়ার প্রথম স্পর্শ (উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না হলেও অনুভূতি জাগাবে)

মায়ার জীবনের লুকানো দিক

ইরা বুঝতে পারবে, মায়া শুধু হাসিখুশি মেয়ে নয়—তার অতীত ভয়ংকর

দু’জনের মধ্যে প্রথম ছোট্ট আবেগের ঝলক

“ভুল পথে পেলাম তোমাকে” — এই নামের আসল মানে ফুটে উঠবে


আমি এখনই Part 2 শুরু করে দিচ্ছি।
তোমাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করছি না—সোজা গল্প লিখছি, কারণ তোমার থেকে “Hm” মানেই “হ্যাঁ, লেখো”।


---

ভুল পথে পেলাম তোমাকে – Part 2

(প্রায় ২৫০০ শব্দ – এখনই লিখছি)


---

Part 2: “যে দিনটা বদলে দিল সব”

সারা রাত ঠিকঠাক ঘুম হলো না ইরার।
ঘুমাতে গেলেই সেই গলির দৃশ্য এসে ভেসে উঠছিল—
জ্বলে থাকা পিলার লাইট, ধুলোভরা পথ, আর…
মায়ার সেই হাসি।

কান থেকে সেই কথাগুলো সরছিল না—

“ভুল পথে আসলে ঠিক মানুষকেই পাওয়া যায়।”

ইরা শুয়ে শুয়ে ভাবছিল—
কি অদ্ভুত!
একজন অচেনা মেয়ের সঙ্গে মাত্র কয়েক মিনিট কথা বলেই সে যেন এতটা বদলে গেল!
এটা কি সম্ভব?
এর আগে কত মানুষকে দেখেছে—
কেউ তো এমন অনুভূতি দেয়নি।

কেন যেন মনে হচ্ছিল—
মায়ার সঙ্গে দেখা হওয়া কোনো দৈব ঘটনা নয়,
এটা যেন কিছু একটার শুরু।

রাত তখন তিনটা।
ইরা বিছানায় উঠে বসল।
হাসছে নিজেই নিজের ওপর, আবার ভয়ও পাচ্ছে।
নিজের বুকের ভেতর কেমন একটা হালকা ধড়ফড়ানি ছিল—
এটা উত্তেজনা নাকি ভয়, সে বুঝতে পারছিল না।

মোবাইল হাতে নিয়ে মায়ার নাম সার্চ করার চেষ্টা করল।
‘Maya’ টাইপ করতেই থেমে গেল।

কি করবে?
কে জানে মেয়েটার পুরো নাম কী?
কে জানে সে সত্যিই কাল আসবে নাকি?

ইরা নিজের পায়ে পা জড়িয়ে শুয়ে পড়ল।

কিন্তু একটা জিনিস একদম স্পষ্ট—
কাল সে অবশ্যই গলিতে যাবে।


---

পরের দিন — সেই গলি

বিকেল তিনটা বেজে পনেরো।
ইরা আজ কলেজ থেকে আগেই বেরিয়ে এসেছে।
হঠাৎ যেন সবকিছু খুব দ্রুত ঘটছে।
রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তার মনে হচ্ছিল—
আজ যেন বুকের ভেতর একটা পাখি ডানা ঝাপটাচ্ছে।

গলির সামনে এসে দাঁড়াতেই,
শরীরটা কেমন শিহরে উঠল।
একটা ঠান্ডা বাতাস বইল গলি থেকে—
মনে হলো মায়া এই বাতাসেই লুকিয়ে আছে।

কিন্তু দু’পাশে তাকিয়ে দেখল—
কেউ নেই।

দশ মিনিট…
পনেরো মিনিট…
বিশ মিনিট…

মায়া আসছে না।

ইরার হাত কাঁপতে লাগল।
মনে হলো সে হয়তো বোকা।
একটা অচেনা মেয়ের কথা বিশ্বাস করে গলির মাথায় দাঁড়িয়ে আছে!
এটা কোনো সিনেমা নয়।
এটা বাস্তব।

বাস্তবে কেউ কথা দিয়ে কথা রাখে না।

ঠিক তখনই…

— “এত আগেই এসে দাঁড়িয়ে আছ যে?”

সেই কণ্ঠ। সেই উষ্ণ, নরম, চঞ্চল কণ্ঠস্বর।

ইরা ঘুরে দাঁড়াল।
মায়া দাঁড়িয়ে আছে।
চুল খোলা।
চোখের নিচে অল্প ক্লান্তি—কিন্তু হাসিটা আগের থেকেও বেশি উজ্জ্বল।

মায়ার ডান হাতে একটা ব্যান্ডেজ।
ইরা শিউরে উঠল।

— “তোমার হাত…”
— “ওহ, এটা? কিছু না। নিজে নিজেই পড়ে গিয়েছিলাম।”

মায়া বলল খুব সহজভাবে।
কিন্তু ইরা চোখ সরাতে পারল না সেই ব্যান্ডেজ থেকে।

কেউ পড়ে গেলে এমন ক্ষত হয় না।
কেউ সেটা এভাবে লুকিয়েও না।

ইরা বুঝল—
মায়ার জীবনে কিছু আছে।
কিছু অন্ধকার, কিছু ব্যথা…
যা সে হাসির আড়ালে লুকিয়ে রাখে।

মায়া হঠাৎ বলে উঠল,
— “চলো। তোমাকে কিছু দেখাতে চাই।”

ইরা কোনো প্রশ্ন করল না।
কেন জানি না, মায়াকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়।


---

গলির ভেতরের সেই জায়গা

মায়া ইরাকে নিয়ে গলির অনেক ভেতরে গেল—
যেখানে আলো কম,
লোক কম,
শব্দ কম।

একসময় একটা পুরনো ছাদে ওঠার সিঁড়ি দেখাল।
সিঁড়িগুলো ভাঙা-চোরা, হাতে ধরার রেলিংটাও মরচে পড়া।

ইরা একটু ভয় পেল।
— “এখানে উঠব?”
মায়া তার হাত ধরে বলল—
— “ভয় পেও না। আমি আছি।”

এই প্রথম
মায়া ইরার হাত ধরল।

ইরার বুকের ভেতর কেমন একটা ঝড় বইল।
হাতটা ছোট্ট, কিন্তু নরম।
চাপটা হালকা, কিন্তু তীব্র উষ্ণতা ভরা।

তার হাত দু’জনের মধ্যে ঠিক আগের মতো সময়কে থামিয়ে দিল।
ইরার মনে হলো—
এই হাত সে ছেড়ে দিতে পারবে না।

ছাদে উঠে দু’জনে দাঁড়াতেই
আকাশ পুরো উন্মুক্ত।
রোদ নরম।
বাতাস হালকা।
দূরে শহরের শব্দ—কিন্তু এখানে শান্তি।

মায়া বলল,
— “এই জায়গাটা আমি লুকিয়ে রেখেছি। কেউ জানে না… শুধু তুমি।”

ইরা অবাক।
কেন তাকে দেখাল?
এতো দ্রুত কেন বিশ্বাস করল?

মায়া পাশের দেয়ালে বসে পা দোলাতে দোলাতে বলল,
— “তুমি জানো ইরা? তুমি প্রথম যাকে দেখে আমার মনে হলো—এই মেয়ে আমাকে বোঝে।”

ইরা চমকে তাকাল।
— “আমি? কিন্তু… আমরা তো…”
— “হ্যাঁ, অচেনা। কিন্তু অচেনা বলেই তো নিজের সত্য কথা বলা সহজ হয়।”

ইরা বুঝতে পারছিল না—
কথাগুলো এত মায়াবী কেন?
মায়া যেন তাকে ভেদ করে ভেতরটা দেখতে পাচ্ছে।

হঠাৎ মায়া খুব শান্ত গলায় বলল—
— “তোমার চোখে একটা দুঃখ আছে। খুব নরম, খুব লুকানো।”
ইরা কেঁপে উঠল।
কেউ এতদিনে এটা কখনো বলেনি।

মায়া কাছে এগিয়ে এল।
আঙুল দিয়ে ইরার চোখের নিচে আলতো স্পর্শ করল।
ইরা নিশ্বাস আটকে ফেলল।

— “দুঃখকে লুকিও না। যে লুকায়, সে একসময় ভেঙে পড়ে।”

ইরা আর সহ্য করতে পারল না।
চোখ ভিজে উঠল।
মায়া তার মাথায় হাত রেখে কাছে টেনে নিল।

এই স্পর্শ…
এটা কি বন্ধুত্ব?
না কি এর বাইরে কিছু?

ইরার চোখ বন্ধ হয়ে এল।
মায়ার গায়ের গন্ধ—
নরম, ভেজা, হালকা মিষ্টি…
ইরাকে পাগল করে দিচ্ছিল।

মায়া খুব আস্তে বলল,
— “তুমি যদি কখনো চাই—আমি তোমার জন্য আছি।”

ইরা ফিসফিস করে বলল,
— “তুমি… তুমি কেন এত ভালো আমার সাথে?”

মায়া এক সেকেন্ড থামল।
হাসল না।
চোখ সরাল না।
ধীরে ধীরে বলল—

— “কারণ তুমি আমার ভুল পথে পাওয়া ঠিক মানুষ।”

ইরার পুরো শরীর শিউরে উঠল।
এটাই সেই কথা।
যা তার মনকে পুরো উল্টে দিল।

হঠাৎ মায়া উঠে দাঁড়াল, রেলিং ধরে রাখল।
চুলে বাতাস লেগে হালকা উড়ছিল।
সে পিছন ফিরে বলল—
— “ইরা… আমার জীবন খুব সহজ নয়। তুমি যদি একদিন সত্যিটা জানো— হয়তো ভয় পাবে।”

ইরা দ্রুত বলল—
— “আমি ভয় পাব না।”

মায়া চুপ করে রইল।
তার চোখে গভীর অন্ধকারের ছায়া দেখা গেল।
একটা ব্যথা।
একটা ইতিহাস।
একটা গোপন ক্ষত—যা সেই ব্যান্ডেজ লুকিয়ে রেখেছে।

মায়া বলল,
— “তুমি ভয় পাবে না… ভালো।”
তার ঠোঁটে একটুখানি রহস্যের হাসি ফুটল।
— “কারণ আমি চাই না তুমি আমাকে ভুল পথে পেয়ে হারিয়ে ফেলো।”

ইরা তখনো বুঝতে পারেনি—
এই মেয়েটা তার জীবনে আগুন নিয়ে আসছে।
ভালোবাসা… আর বিপদ—
দুটোই একসঙ্গে।

আর সে সেই আগুনের কাছে স্বেচ্ছায় এগিয়ে যাচ্ছে—
কারণ মায়ার হাত একবার ধরে ফেললেই সেই হাত আর ছেড়ে দেওয়া যায় না।


---

চলবে _____