Jharapata 36 in Bengali Love Stories by Srabanti Ghosh books and stories PDF | ঝরাপাতা - 36

Featured Books
Categories
Share

ঝরাপাতা - 36

ঝরাপাতা

পর্ব - ৩৬

❤💕❤💕❤💕❤

মিলিকে দেখেই রনি ফোন করে, ফোন নিয়েই দাঁড়িয়ে ছিল। মিলি ফোনটা রিসিভ করতেই রনি দ্বিতীয় ভুল করে, "মিলি সরি বলছি, তাও এরকম করছ?"

আবার একই গল্প ! অসহ্য লাগে মিলির। বারান্দায় আর বেরোয় না, ঘর থেকেই বলে, "কিচ্ছু করিনি রনিদা। এইমাত্র ঘুম থেকে উঠলাম। তুমি আছ কিনা একবার শুধু দেখেছি। কি করব? তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে যে সকালে।"

রনির হুঁশ হয়, শুধু তিক্ততা বাড়ছে, কথা পালটাতে বলে, "একবার বাইরে এসো না, আমারও তো তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে।"

মিলি বারান্দায় বেরোয়, রনির দিকে একবার তাকিয়েই মাথা নিচু করে ফেলে, খুব কান্না পাচ্ছে, রনিদাটা কিচ্ছু বোঝে না। রোজ খালি ধমকাবে, ঝগড়া করবে। 

রনি উলটো বোঝে, ভাঙা গলায় বলে, "তাকাবে না আমার দিকে?"

এবার রনির গলায় মিলির সন্দেহ হয়, "কি হয়েছে তোমার? ঠাণ্ডা লেগেছে? গলাটা ভাঙা ভাঙা কেন?"

মিলি প্রায় বারো ঘন্টা পর মিষ্টি করে কথা বলতে রনি আর সামলাতে পারে না, "কি হয়েছে জিজ্ঞেস করছ? সারারাত তোমার ফোনের অপেক্ষা করেছি। ভোর থেকে দাঁড়িয়ে আছি। আর তুমি ভাবছ আমি......."

মিলি মুখ তুলে তাকিয়েছিল, রনির উসকোখুসকো চেহারা ততক্ষণে স্পষ্ট হয়েছে ওর চোখেও, "মানে? সারারাত ঘুমোওনি? পাগল নাকি তুমি? কথা হল তোমার সঙ্গে, আমি বললাম তুমি ঠিক বলেছ। তারপর এরকম কেন করছ?"

- "বলেছ। আমি ভেবেছিলাম রাগ করে বলেছ।" রনি গোঁজ হয়ে আছে। 

রাগ মিলির ছিল, মিথ্যে বলতে পারে না। কথা ঘুরিয়ে বলে, "সরি রনিদা, আমি বুঝিনি তোমার এত খারাপ লেগেছে। আসলে বন্ধু ফোন করেছিল তাই ছেড়ে দিলাম। তোমার সঙ্গেই তো সারাদিন ঘুরে এলাম। তারপরও ফোন করলে বাড়িতে কি বলবে। তাই আর ফোন করিনি।"

- ''তাই তো? আমার উপর আর রাগ নেই তো?" রনি এবার প্রাণ ফিরে পায়। 

এখন তো সত্যিই আর রাগ নেই, মিলি মাথা নাড়ে, "না রনিদা, সত্যি রাগ নেই। তুমি একটু ঘুমিয়ে নাও। ইউনিভার্সিটি আছে আজ তোমার। যাও, একটু শুয়ে নাও। আমি কলেজে চলে যাব। তুমি দেরি করে বেরিও।"

রনি আঁতকে ওঠে, "না না, আমি যাব তোমার সঙ্গে।"

- "একদম না। এবার আমার কথা না শুনলে সত্যি রেগে যাব। আচ্ছা ঠিক আছে, আমি সরি। কাল যদি আমার জন্য তোমার খারাপ লেগে থাকে, আমি সরি। আর এরকম কোরো না।"

- "তুমি সরি বোলো না। দোষটা আমার ছিল।"

- "তাহলে যাও, শুয়ে পড়ো। আজ ফেরার সময় তোমার সঙ্গে গল্প করব।"

- "আরেকটু দাঁড়াও।" বুকের ভিতর থেকে বোধহয় রনি চেয়ে বসে। মিলি এবার ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে, "সরি রনিদা, আর কোনোদিন তোমাকে কষ্ট দেব না। আমি একবার কথা না বললে তুমি এরকম করবে ভাবতেই পারিনি।"

- "মিলি, প্লিজ কেঁদো না। আমি রিকোয়েস্ট করছি। আচ্ছা, আমি শুতে যাচ্ছি, তোমার সব কথা শুনব। আর কেঁদো না।" সাধ্যসাধনা করে রনি কান্না থামায়। 

💟💕💟💕💟💕💟

বেলা হচ্ছে দেখে বনি ডাকতে এসে দেখে রনি ঘুমোচ্ছে। গায়ে হাত দিয়ে ঠেলতেই বোঝে, জ্বর এসেছে। বাড়ির সবাই ছুটে আসে। ডেকে তুলে রনিকে কোনোমতে চা বিস্কুট খাইয়ে ওষুধ খাওয়ানো হয়। ইউনিভার্সিটি যাবে না ফোন করে দিয়ে আবার শুয়ে পড়ে। ওষুধের প্রভাবেই হয়তো তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও পড়ে। বনি কলেজে যায়, পালা করে বাড়ির সবাই উঁকি মেরে দেখে যায় রনিকে। 

রনিকে ডেকে তুলল পিউ। অনেক ঠেলতে আধোঘুমে বিরক্ত রনি সবে বলেছে, "উঁহ, ঘুমোতে দাও না। আমি আজ বাজার যাব না।"

পিউ ওর গলা পেয়েই আরও ঠেলাঠেলি বাড়িয়ে দেয়, "আরে ওঠো না। শোনো না, তোমার ঐ চৈতালী ম্যাডাম ফোন করেছেন, ভীষণ দরকার। ওঠো না। আমি বললাম তোমার জ্বর। তাও বললেন একবার ফোন করতে। আরে আবার পাশ ফেরে, ওঠো না। কি হয়েছে দেখো না। মিলিটা একা একা কলেজ গেছে।"

রনির ঘুম ভেঙেই গেছিল। মিলির নাম শুনতেই লাফিয়ে উঠে বসল, "ক্কি ক্কি কি হয়েছে? মিলি ফোন করেছে? দাও।"

পিউ ফোনধরা হাতটা রনির নাগালের বাইরে সরিয়ে বলে, "না মিলি না। চৈতালী ম্যাডাম। দরকারী কথা বলবেন বলছেন। দেখো না, মিলির ব্যাপারে কিছু কিনা।"

রনি ফোন নিয়ে হাই তোলে, চোখ ডলে সময় দেখে তিনটে বাজে প্রায়। ফোন করার আগে সি *গা *রে *টের প্যাকেটটা নিতেই পিউ ধমকায়, "সারাদিন কিছু খাওনি। এখন একদম এসব না। ফোন করে নাও, আমি খেতে দিচ্ছি। জ্বর আর নেই।"

রনি একটা আঙ্গুল তুলে আবদারের হাসি হাসে। "আমি জানি না যাও" বলে পিউ ওর খাবার আনতে চলে যায়। 

সি *গা *রে *ট ধরিয়ে চৈতালী ম্যাডামকে ফোন করে। বাকি সি *গা *রে *ট টা ওর হাতেই পুড়তে থাকে। ফোন ছেড়ে রাগে সি *গা *রে *ট টা নিচের বাগানে ছুঁড়ে ফেলে। মাথাটা এখনও টলমল করছে। নাহলে ও এখনই মিলির কলেজে গিয়ে উদয় হত। 

পিউ এসে ওর মুখচোখ দেখে অবাক ! নিচু টেবিলটা টেনে খাবারের থালা নামিয়ে কাছে এসে দাঁড়ায়, "কি হয়েছে ভাই? মিলি ঠিক আছে তো?"

- "মিলি ঠিক আছে। আমি এবার পাগল হয়ে যাব।"

- "মানে?"

- "মিলি কি করেছে জানো? চৈতালী ম্যাডাম ওকে দুটো সেমিস্টার এবার পরীক্ষা দিতে দেবেন না বলে এক বিজনেসম্যানকে আমদানি করেছে। তিনি প্রিন্সিপাল স্যারকে বলেছেন, মিলি যা চায় করতে দিতে। বদলে মার্কেটে প্রিন্সিপাল স্যারের যে এ্যাপ্লায়েড ম্যাথামেটিকস এর বই আছে, সেটা ওর কোম্পানি থেকে ছাপাবেন। স্যারকে ডবল পার্সেন্টেজ দেবেন। চৈতালী ম্যাডামকে প্রিন্সিপাল স্যার যা তা বলেছেন ঐ মেয়েকে পড়ান বলে। আমার আর মুখ দেখানোর উপায় রাখে নি।"

- "ওমা, সেকি ! কাল সারাদিন তোমার সঙ্গে ঘুরল, ঘুণাক্ষরেও বলল না !"

- "স্যার তো বেদম খেপে গেছেন।" রনি উঠে ঢকঢক করে জল খায়। আবার সি *গা *রে *ট ধরিয়ে ব্যালকনির দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলতে থাকে, "চৈতালী ম্যাডাম কোনোমতে ঠান্ডা করেছেন। ওকে বোধহয় এবার পরীক্ষাতেই বসতে দিতেন না। ম্যাডাম ওর ডিপ্রেশনের কথাটা মনে করিয়ে বলেছেন, ওরা ওকে সরাসরি কিছু বলবেন না। যদি ওর কোনো বাড়াবাড়ি হয়, তখন মুশকিল। তাই আমাকে ফোন করে ওর গার্ডিয়ান কাউকে নিয়ে যেতে বলেছেন কাল। কি করব বলো? আমি এদিকে কিছুই জানি না।"

- "ঠিক আছে। ওর বাড়িতে বলব আমরা। ওরা যা ভালো বোঝে করবে। এখন চোখেমুখে জল দিয়ে এসো, কিছু খাও।" পিউ তাড়াতাড়ি ঝামেলা পাকার আগে ভাইকে খাইয়ে দিতে চায়। 

রনি না বলার আগেই মায়ের সাড়া পায়, "রনি খেলি? কেমন আছিস এখন?" ছেলেদের ধূমপানের জন্যই মণিকা সাড়া দিয়ে ঢোকে। 

রনিও তাড়াতাড়ি হাত লুকোয়, "না মা খাচ্ছি। এই আসছি।" পিউকে চোখের ইশারায় মাকে কিছু বলতে বারণ করে বাথরুমে চলে যায়। 

কলেজে পলাশ সারাদিন ছটফট করে কাটায়। অদ্রিজা ওকে বারবার জিজ্ঞেস করছে, সারপ্রাইজ কি হল। এদিকে ওর বাবা ফোন করে দিয়েছে, প্রিন্সিপাল স্যারের সঙ্গে কথা হয়ে গেছে। অথচ স্যার তো অদ্রিজাকে ডেকে পারমিশনের খবরটা শোনাচ্ছেন না ! চারটেয় ছুটির সময় ও ধরে নেয়, এর জন্য হয়তো পেপার রেডি করতে হবে। সেটা করে একেবারে পাকাপোক্ত ঘোষণা করবেন স্যার। অদ্রিজাকে বলে, ওর প্ল্যানটা যাকে দায়িত্ব দিয়েছিল, সে কাজ শেষ করতে পারেনি। কাল সব হবেই। 

রনি রাস্তায় নজর রেখে বসে আছে। মিলির পাত্তা নেই। একে সারপ্রাইজ প্ল্যানটা পিছিয়ে গেছে, তায় রনি আজ নিতে আসছে না বলে বন্ধুদের সবাইকে পলাশ চিকেন কাটলেট খাওয়াচ্ছে। ঘড়ি দেখছে আর রনির মাথায় রাগ চড়ছে। অবশেষে ছ টা নাগাদ মিলি এল, একা। আসলে অঙ্কুরের সঙ্গে বাসে এসে নেমেছে। আর লাগবে না বলায় অঙ্কুরও বাসস্টপ থেকে বাড়ির দিকে হাঁটা দিয়েছে। 

রনি পিউকে ডাকে, "দাদা এলে চা টা দিয়ে ও বাড়ি চলো।"

পিউ ওর একটা হাত ধরে অল্প চাপ দেয়, "টেনশন কোরো না, সব ঠিক হয়ে যাবে।"

💜💙💜💙💜💙💜

দরজা খুলে তিনজনকে দেখে গোপা খুশি খুশি ভিতরে ডাকে, "এসো এসো সবাই। বোসো। এই তোমাদের কাকু এলো। চা করছিলাম। তোমাদের জন্যও করি?"

- "মিলি কোথায় কাকিমা?" রনি এসব খেজুরে আলাপের ধার ধারে না। গোপার অবশ্য হাসি পেয়ে যায়। মিলি বলেছিল, রনির কি কাজ আছে, আজ কলেজে নিয়ে যেতে পারবে না, ফোন করে দিয়েছে। ভেবে নেয় রনি মিলির সঙ্গে দেখা করতেই এসেছে। 

- "ঐ তো, ঘরে, পড়ছে বোধহয়। এ্যাই মিলি দেখ কারা এসেছে। পিউরা এসেছে, এখানে আয়।" গোপা ডাকাডাকি শুরু করলে, পিউও যোগ দেয়। 

মিলি দৌড়ে নেমে এসে সবে হাসিমুখে বৌদি বলেছে, চোখ রনির দিকে, রনি প্রায় গর্জন করে ওঠে, "চন্দন সাহাকে কিভাবে চেনো তুমি? যদি সেইই সব করতে পারবে জানতে, আমাকে এর মধ্যে জড়ালে কেন?" 

বনি তাড়াতাড়ি ভাইয়ের হাত ধরে থামায়, "আরে আস্তে। চেঁচাস না। কি হয়েছে সেটা বল।"

রনি আবার মুখ খোলার আগেই সমর গম্ভীর গলায় বলে, "কি হয়েছে আমিও জানতে চাই। যার জন্য তুমি আমার বাড়িতে আমার সামনে আমার মেয়েকে ধমকাচ্ছ ! কোন অধিকারে তুমি ওকে ধমকাচ্ছ জানতে পারি?"

রনি আবার কথা বলে, এবারও গলায় গর্জন, "আপনি আপনার মেয়েকেই জিজ্ঞেস করুন, ও কি করেছে? নাকি আপনারা সবাই জানেন, আপনার সাপোর্ট আছে?"

- "আহ রনি, তুই চুপ করত।" বনি ওকে হাত ধরে একটা সোফায় বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, "কাকু আমি বলছি, কি হয়েছে।"

- "তুমি কেন? যে এত গলাবাজি করছে সেই বলুক।" সমর রনির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে মিলিকে আড়াল করে। মিলি আর গোপা কার্যত কাঁপছে, থই পাচ্ছে না কি অশান্তি পেকেছে নতুন করে? 

সমরের গর্জনে রনি একটু একটু বুঝতে পারছে, চীৎকারটা করা উচিত হয়নি। সোফায় বসে না, তবে গলা নামিয়ে বলে, "আপনি জানেন না মিলি কি করেছে?"

- "জানি তো অনেককিছুই। তুমি কি করেছ তাও জানি। তুমি কোনটার কথা বলছ?"

- "ঐ যে বললাম চন্দন সাহা কে? আপনি না চিনলে মিলিকে বলুন বলতে।''

- "আমার মেয়ে তোমার সামনে কোনো কৈফিয়ত দেবে না রনি। আমাকে তুমি কিনে রেখেছ ভেবো না। মিলি কোনো কথার উত্তর দেবে না। যা, ঘরে যা তুই। তোমার কি বলার আছে আমাকে বলো।" বাবা বললেও মিলির ঘরে যাওয়ার ক্ষমতা নেই, সে হাঁ করে রনির দিকে তাকিয়ে আছে। 

বনি আবার অশান্তি থামানোর চেষ্টা করে "কাকু, সত্যিই একটা ব্যাপার হয়েছে। রাগ করবেন না, আমি বলছি শুনুন। আর এ্যাই রনি, ক্ষমা চা কাকুর কাছে। কি রে তুই, খালি মাথা গরম করবে ! ক্ষমা চাইলি তুই?"

রনি অন্যদিকে তাকিয়ে বলে, "সরি আমার অন্যায় হয়ে গেছে। কিন্তু মিলি...."

- "আচ্ছা তুই চুপ কর। আমি বলছি। কাকু শুনুন...."

- "তোমার ভাইকে বলো, এই অসভ্যের মতো ক্ষমা চাওয়ার কোনো দরকার নেই। কিছু বলার থাকলে বলো, নাহলে সবাই এখন এসো। যা হিসেবপত্র আমি কাল মিটিয়ে দেব।" সমর কোনোমতে নিজের রাগ সামলায়। 

- "কাকু ওর হয়ে আমি মাপ চাইছি। কথাটা শুনুন, বুঝবেন, ও মিসবিহেভ করেছে, তবে ব্যাপারটা গণ্ডগোলের। এ্যাই মিলি, চন্দন সাহা কে বল না। কিভাবে চিনিস তুই?" বনি কথা শুরু করতে চায়। 

- "খবরদার বনি, আমার মেয়েকে একটাও প্রশ্ন করবে না। আমার মেয়েটাকে কবার মারবে তোমরা?"

হতাশ হয়ে বনি হাত উলটোয়, "কাকু চন্দন সাহা বলে কে একজন ওর কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে দেখা করেছেন। বলেছেন, ওকে এবার দুটো সেমিস্টার একসঙ্গে পরীক্ষা দিতে দিলে স্যারকে কিছু সুবিধা পাইয়ে দেবেন। স্যার প্রচণ্ড রেগে গেছেন। ও যার কাছে পড়ে, সেই ম্যাডাম রেগে গেছেন। শুধু রনির সঙ্গে পরিচয়ের জন্য আর ওর ইয়ে মানে শরীর খারাপ বলে ওকে আজ ডেকে বকাবকি করেননি। ম্যাডাম ভাইকে ফোন করেছেন। সে যাচ্ছেতাই ব্যাপার। কাল আপনাকে যেতে বলেছেন কলেজে। ওকে নাহলে পরীক্ষাই দিতে দেবেন না।" এক নিশ্বাসে শেষ করে বনি। 

- "মানে? কে লোকটা? মানে আমি তো কাউকে বলিনি !" মিলি আকাশ থেকে পড়ে। 

- "একদম মিথ্যে কথা বলবে না। তুমি না বললে, কে বলেছে?" রনি ঝাঁঝিয়ে ওঠে। 

- "ভাই, তুমি চুপ না করলে বাড়ি চলো। যা বলার তোমার দাদা বলেছে, তারপর কাকুর যা ইচ্ছে করবেন।" পিউ উঠে দাঁড়ায়। 

- "পিউ বোসো। রনি, কথাটা সত্যি?" সমর যথেষ্ট অবাক। 

- "আমার কথা তো বিশ্বাস করেন না। ঠিক আছে, আমি আর একটাও কথা বলব না। কাল কলেজে যান। যদি দেখেন আমি মিথ্যে বলেছি, যা করার করবেন। আর নাহয় বৌদিকে জিজ্ঞেস করুন। ও ফোনটা ধরেছিল প্রথম।"

জিজ্ঞেস করার আগেই পিউ বলে, "হ্যাঁ, কাকাবাবু, সত্যিই ম্যাডাম ওকে ফোন করেছিলেন। সবাই রেগে গেছেন। এ তো ব্রাইব অফার করা। ভাই একজন লেকচারার। ম্যাডাম ওর বন্ধুর দিদি। ওর মুখটা কোথায় থাকল বলুন? ওর উচিত হয়নি এভাবে চেঁচামেচি করা, কিন্তু সেই তিনটে থেকে ও বসে আছে, মিলি আজ ফিরেছেও কত দেরি করে। তাই ওকে জিজ্ঞেসও করতে পারছি না। আমরা সবাই টেনশন করছিলাম।"

- "দেরি হল কেন তোর আসতে? রনির সঙ্গে আসিসনি?" সবে অফিস থেকে ফিরেছে সমর, মিলির সঙ্গে কথাই হয়নি ওর। 

- "অঙ্কুরের সঙ্গে ফিরেছি। আমরা বন্ধুরা, ঐ পলাশ খাওয়ালো সবাইকে। ও নাকি সারপ্রাইজ প্ল্যান করেছিল, সেটা যাকে করতে দিয়েছিল করেনি, তাই খাওয়ালো।" বলতে বলতেই মিলির মাথা খোলে, "কি নাম বললে বনিদা? চন্দন সাহা? চন্দন সাহা তো পলাশের বাবা ! ওদের যে বিজনেস আছে সাহা বুক হাউজ !"

- "নিন, শুনুন, ওর বেস্টফ্রেন্ডের বাবা। এইজন্য চব্বিশ ঘন্টা পলাশের সঙ্গে ফোন ! যখনই শুনছি, পলাশ ফোন করেছে ! তুমি পলাশকে দিয়ে এইসব বলিয়েছ। ছিঃ মিলি ছিঃ ! এভাবে পরীক্ষা দেবে তুমি?"

চলবে