(এক চিরন্তন ভালোবাসার কবিতা)
প্রাচীন গ্রীসের অলিন্দে, অলিম্পিয়ার নীচে,
তুমি ছিলে দর্শনের গুরু, আমি নবীন ছাত্রী।
তোমার কণ্ঠে নেমে আসত প্লেটোর ছায়া,
আর আমি শ্রুতিমধুর কাব্যের ভাষায় গেঁথে রাখতাম প্রতিটি বাক্য,
যেন এক অলিখিত প্রেমের দর্শন।
তুমি বলেছিলে, “ভালোবাসা কোনো যুক্তির ধার ধারে না,”
তোমার ঠোঁটের বাঁকে সেই অক্ষরগুলো আজও জীবন্ত,
আর আমি চুপিচুপি তোমার প্রতিটি হাসিতে খুঁজতাম,
একটা জন্মের অপেক্ষমান ডাকনাম।
তুমি চোখ তুলে একবার চেয়েছিলে,
আর আমার হৃদয়ে নেমে এসেছিল শত শত শতাব্দীর মৌনতা—
যেমন খনিজ-নির্জন পাথরে গাঁথা এক দেবীর মুখ,
যার চোখে লেখা থাকে প্রেম, কিন্তু ঠোঁটে থাকে প্রতিজ্ঞার শিলমোহর।
তারপর এক সন্ধ্যায়, সেই অলিম্পিয়া শহর পুড়ে গিয়েছিল—
যুদ্ধ, অভিশাপ, ক্ষমতার লোভ—সব গ্রাস করেছিল আমাদের নগরী।
আর তুমি হারিয়ে গেছ এক ছাইরঙা ভোরে,
আর আমি দাঁড়িয়ে রইলাম ধ্বংসস্তূপে, হাতের কবিতা আর চোখের জল নিয়ে।
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম—
"আবার দেখা হবে, অন্য কোনো জন্মে, অন্য কোনো নগরীতে…"
তাই জন্ম বদলালো, ইতিহাস পাল্টালো,
কলেজের করিডোরে হঠাৎ হাওয়া বয়ে গেলে তোমার চুল উড়ে যায় আর আমি হারিয়ে ফেলি এক জন্ম,
নতুন শহর, নতুন নাম,
কিন্তু সেই পুরনো আত্মার টান রয়ে গেল চিরন্তন।
যার হৃদয়ে অলিম্পিয়ার ছাই এখনো গন্ধ ছড়ায়।
তুমি পড়াও—“ভালোবাসা পুণর্জন্মে টিকে থাকে না,”
আর আমি বেঞ্চে বসে ফিসফিস করে বলি—
"তুমি কতো মিথ্যা বলো…"
তোমার গলার টোনে বাজে এথেন্সের সন্ধ্যা,
তোমার হাতের লেখায় থাকে সেই পুরনো দর্শন,
তবুও তুমি চেনো না আমায়—
চোখে চোখ রাখলেও কোনো পরিচয় ফোটে না,
আজও যখন ক্লাস শেষে আমি একা বসে থাকি,
তোমার ছায়া পেরিয়ে যায় দরজার ধারে,
আর আমার বুকের ভিতরে বেজে ওঠে
একটা হারিয়ে যাওয়া বাঁশির সুর—
হয়তো হ্যামিল্টনের সেই বাঁশিওয়ালার,
যে হারিয়ে যায়…
আবার ফেরেও জন্মান্তরের পথে।
মনে হয়, এথেন্সে ফেরার ট্রামটা মিস করে গেছি—
তবুও জানি,
একদিন সেই ট্রাম আসবে—
হয়তো কোনো ভবিষ্যৎ নগরীর রেলস্টেশনে,
তুমি থাকবে, আমি থাকবো,
অন্য নামে, অন্য পোশাকে,
তবুও সেই চিরপরিচিত টান নিয়ে।
তখন আমাদের আর কোনো বাঁধা থাকবে না,
না সামাজিক, না শারীরিক, না নৈতিক—
তখন শুধুই মিলন,
শুধুই কবিতা,
শুধুই আমরা।
হয়তো এক মহাকাব্য লেখা হবে আমাদের নিয়ে—
যেখানে প্রেম হবে সময়েরও ঊর্ধ্বে,
আর ‘বিরহ’ হবে একমাত্র বাহন পুণর্জন্মের।
হারিয়ে যাব সময় আর স্রোতের ঘূর্ণি পাকে,,
তবুও জানি যেখানে শেষ হবে ভালোবাসার ভাষা
সেখানেই আবার শুরু হবে আলিয়াক্সের আরেকটি ঢেউ ,
আর আমাদের পুনর্জন্মের গল্প।
আলিয়াক্সের জল যেখানে থেমে যাবে, সেখানেই আবার আমাদের দেখা হবে....
তুমি তাকিয়ে বলবে—
“তুমি তো আগে কোথাও ছিলে, তাই না?”
আর আমি হাসবো, নিঃশব্দে বলবো—
“আমি তো সব জন্মেই তোমার ই ছিলাম নাহলে এমন ছন্দ হতো কীকরে তোমায় নিয়ে,,,
আর তুমি…
আমার চিরন্তনের ভালোবাসা,
যার কাছে আমি ভালোবাসা শিখেছি— ব্যাখ্যার ঊর্ধ্বে, সময়ের অতীতে, প্রাচীন কোনো সুরে🌹🌹🌹